রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্য মূল্যে অস্থিরতা

হরতাল, অবরোধ ও রাজপথের সহিংসতায় রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় কৃষকরা কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। উৎপাদক এলাকায় কোনো কোনো সবজির দাম এতই কম যে, তা বাজার বা হাটে নেওয়ার খরচও উঠে আসছে না। অথচ সেসব পণ্য ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে আকাশছোঁয়া দামে। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদনস্থলে তরিতরকারি পানির দামে বিক্রি হলেও পরিবহন খরচ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকার বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে। যশোর থেকে সবজির ট্রাক ঢাকায় আনতে ভাড়া নেওয়া হয় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে তিন থেকে চার গুণ ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় নামমাত্র মূল্যে পণ্য কিনেও লাভবান হচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। পণ্য বিক্রি করে ট্রাকের ভাড়া মেটানোও দায় হয়ে পড়ছে। অন্য সময়ের হরতাল-অবরোধে নৌপথ ও রেলপথে তেমন কোনো প্রভাব পড়ে না। সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক সহিংসতায় রেলপথ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নৌপথের ওপরও হামলা চলছে। ফলে নানা ঝুঁকির মোকাবিলা করে যে পণ্য ঢাকায় আনা হচ্ছে তাতে হাত দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়ছে। হরতাল-অবরোধের কারণে মোকামে চালের বাজার স্থিতিশীল কিংবা কমতির দিকে থাকলেও রাজধানীতে তা ঊধর্্বমুখী। সাংঘর্ষিক রাজনীতি এমনিতেই দেশের অর্থনীতির সমূহ সর্বনাশ করছে। লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকায় ফেলছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। দ্রব্যমূল্যের ঊধর্্বগতি সমস্যা আরও জটিল করে তুলছে। রাজনীতিবিদরা সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে আদৌ ভূমিকা রাখেন কিনা তা একটি বিতর্কিত বিষয়। খেতে দেওয়ার মুরোদ না থাকলেও কিল মারার গোসাই হিসেবে তারা যে ভূমিকা রাখছেন তা দুর্ভাগ্যজনক। রাজধানীর পণ্যবাজারে সংকট সৃষ্টির জন্য নিঃসন্দেহে দায়ী চলমান সহিংস আন্দোলন। তবে আন্দোলন উসকে দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীনদের নির্বাচন সংক্রান্ত অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত যে দায়ী তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। অসুস্থ এই পরিবেশ থেকে অবশ্যই সব পক্ষকে সরে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর