সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে-

হরতাল-অবরোধ দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা। কৃষিপণ্য বিশেষত সবজির দাম এতই কম যে, উৎপাদন খরচ ওঠা দূরের কথা বাজারে পণ্য নেওয়ার খরচও উঠছে না। চালের দামও নিম্নমুখী। এ অবস্থা চলতে থাকলে চাষাবাদে কৃষকের কোনো আগ্রহ অবশিষ্ট থাকবে কিনা সংশয় রয়েছে। পাশাপাশি হরতাল-অবরোধকে কেন্দ্র করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে আরেকটি বিপদ। টানা হরতাল-অবরোধে সারা দেশে সার পরিবহন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নাব্য না থাকায় নৌপথেও সর্বত্র সার পরিবহন করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে আমদানি করা সার গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে না। আর সারের অভাবে বোরো মৌসুমে উৎপাদন ব্যাহত হলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে ইউরিয়া সার পাঠানোর লক্ষ্যে নদীর নাব্য বজায় রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে শিল্প সচিব বরাবর চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের সচিব। চিঠিতে বলা হয়, সার পরিবহনের সহজলভ্যতা বিবেচনা করে সাধারণত নৌপথেই ঠিকাদাররা সর্বাধিক পরিমাণ ইউরিয়া সার পরিবহন করেন। এ লক্ষ্যে গত বছরের মতো এবারও নদীর কাঙ্ক্ষিত নাব্য বজায় রাখার জন্য ড্রেজিং করা প্রয়োজন। বৃহত্তর সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে মানুষ বোরো চাষের ওপর নির্ভরশীল। বোরো ধান ঘরে তোলার পর হাওরাঞ্চলের বাড়িতে বাড়িতে পড়ে যায় আনন্দের সাড়া। সারের অভাবে তাদের আনন্দ এবার ফিকে হয়ে যায় কি না, তা নিয়েই এখন উদ্বেগ বেশি। হরতাল-অবরোধের কারণে এরই মধ্যে সারের সংকট দেখা দিয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। বাজারে সার পাওয়া গেলেও পরিবহন খরচের অজুহাতে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন। খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে সার পরিবহনের সব বাধা অপসারণ করা দরকার। কৃষকের মেরুদণ্ড যাতে ভেঙে না যায় তার নিশ্চয়তা বিধানে হরতাল অবরোধ অবসানের উদ্যোগ নিতে হবে। বিদ্যমান সংকটের মীমাংসায় সরকার ও বিরোধী দলকে সমঝোতায় উপনীত হতে হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর