বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

চাই অর্থবহ সংলাপ

দশম সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত বেশির ভাগ দলই অংশ নেয়নি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়া প্রতিটি দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। ফলে বিরোধী দলের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘটনা সাংবিধানিক দিক থেকে নির্বাচনের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এমনটি বলার অবকাশ নেই। তবে ৩০০ আসনের ১৫৩টিতে মাত্র একজন প্রার্থী থাকা, বেশির ভাগ ভোটারের ভোট দানে অনুপস্থিত থাকা নৈতিক দিক থেকে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করেছে। দশম সংসদ ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে কি-না এমন একটি সংশয়ও তৈরি হয়েছে স্বাভাবিক কারণেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন থাকায় বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসানে দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপ শুরুর প্রাসঙ্গিকতা আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব সংকট মোচনে সব পক্ষের অর্থবহ সংলাপ শুরুর তাগিদ দিয়েছেন। বলেছেন, সহিংস ঘটনা বিশেষত মানুষের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রেসব্রিফিংয়েও বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে তাদের উদ্বেগের কথা বলা হয়েছে। তবে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সহিংসতার তীব্র বিরোধিতা করেছেন তারা। স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে স্বীকৃত জাপানের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তারা জনগণকে ভীতসন্ত্রস্তকারী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে এর অবসান দাবি করেছেন। বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক পছন্দ বেছে নিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমনটিও আশা করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বড় দুই দলের দায় রয়েছে। সব পক্ষকে সহিংসতা এড়িয়ে আরেকটি নতুন নির্বাচনের পথে যাওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে এই কমনওয়েলথ দেশটির পক্ষ থেকে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতামত দেশের দুই প্রধান দলের মধ্যে সংলাপের তাগিদ সৃষ্টি করবে। দশম সংসদের মাধ্যমে গঠিত সরকার শপথ নেওয়ার পর বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় উপনীত হওয়াকে প্রধান করণীয় হিসেবে বেছে নেবে। দুই পক্ষের সংলাপে উন্মোচিত হবে সবপক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় এমন একটি নির্বাচনের পথ।

সর্বশেষ খবর