বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

নিকৃষ্ট শহর ঢাকা

বাসযোগ্য দিক থেকে নিকৃষ্ট শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার স্থান দ্বিতীয়। ঢাকাকে হারিয়ে প্রথম স্থানটি অধিকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বৈশ্বিক বাসযোগ্যতা শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে ১৪০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৩৯তম। বাসযোগ্যতা নির্ধারণে জরিপকারী প্রতিষ্ঠানটি পাঁচটি মানদণ্ড ব্যবহার করেছে। স্থায়িত্ব, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোর নিরিখে পরিচালিত এই জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে বাসযোগ্য শহর হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্বের সেরা ১০টি বাসযোগ্য শহরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার চারটি শহর জরিপে স্থান করে নিয়েছে। অন্য তিনটি শহর হলো অ্যাডিলেড, সিডনি ও পার্থ। সেরা দশের মধ্যে এশিয়ার কোনো শহরের নাম নেই। স্মর্তব্য, গত বছর ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট যে জরিপ করে তাতে ঢাকাকে বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসের অযোগ্য নগরী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এদিক থেকে ঢাকার অবস্থান দৃশ্যত উন্নতি হলেও এতে আত্দপ্রসাদের কোনো অবকাশ নেই। কারণ ২০১৩ সালজুড়ে এ মেগা সিটি ছিল রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার। যানবাহনে পেট্রলবোমা ও ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে অহরহ। জননিরাপত্তাকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল রাজনৈতিক সহিংসতার কুশীলবরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আক্রমণাত্দক ভূমিকাও ছিল ঢাকার যাচ্ছেতাই অবস্থার এক সাধারণ চিত্র। ফলে দেড় কোটি মানুষের এই মহানগরীকে বসবাসের অযোগ্য নগর হিসেবে বদনাম কিনতে হয়েছে। গত ৮ মাস যাবৎ স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও রাজপথের সংঘাত বন্ধ ছাড়া আর কোনো দিক থেকে রাজধানী ঢাকার হতচ্ছাড়া অবস্থার দৃষ্টিগ্রাহ্য উন্নতি হয়নি। ঢাকা ইতিমধ্যে যানজটের নগরী হিসেবে বিশ্বজুড়ে বদনাম কিনেছে। নগরীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যেতে যে সময় লাগে সে সময়ে আরেক দেশ থেকে বিমানে ঘুরে আসা সম্ভব। ঢাকার নাগরিক সেবার উন্নয়ন ঘটাতে ঢাকা ভেঙে দুটি সিটি করপোরেশন করা হলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতিই ঘটেনি। এ অবস্থার অবসানে ঢাকাকে মানুষের বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করাই এ মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকার নাগরিক নিরাপত্তার দিকে যেমন নজর দিতে হবে তেমন বাড়াতে হবে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনধারণের সুযোগ।

সর্বশেষ খবর