বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা

তোবা গ্রুপের পাঁচ কারখানার দেড় হাজারেরও বেশি গার্মেন্ট শ্রমিককে বেকারত্বের মুখে ঠেলে দেওয়া হলো। শ্রমিকরা অবৈধভাবে ধর্মঘট করছেন এই অভিযোগে তাদের ওপর শ্রমআইন-২০০৬ এর ১৩(১) এর ধারাবলে খড়গ হানা হলো। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো তোবা গ্রুপের উত্তর বাড্ডার পাঁচটি গার্মেন্ট কারখানা। সোমবার এ গ্রুপের পাঁচ প্রতিষ্ঠান তোবা টেঙ্টাইল, তায়েব ডিজাইন, মিতা ডিজাইন, বুকশান গার্মেন্ট ও তোবা ফ্যাশনসের কারখানা বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। যে ধারাবলে কারখানা বন্ধ করা হলো, তাতে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা মজুরি পাবেন না। তোবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত কারখানা বন্ধের নোটিসে বলা হয়, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেলে থাকায় মে মাসের মজুরি যথাসময়ে দিতে পারেননি। সে জন্য কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা গত ১০ জুন থেকে কাজ বন্ধ করে দেন। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে তাদের মজুরি দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন। নোটিসে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বহিরাগত লোকের সহযোগিতায় অবৈধভাবে অবস্থান, মালামাল লুট, যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়। শ্রমিকদের আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল বলেও উল্লেখ করা হয় নোটিসে। স্মর্তব্য, মে থেকে জুলাই তিন মাসের মজুরি, ওভারটাইম ও ঈদ বোনাসের দাবিতে তোবার পাঁচ কারখানার শ্রমিকরা ঈদের আগের দিন থেকে টানা ১১ দিন উত্তর বাড্ডার হোসেন মার্কেটের সপ্তমতলার কারখানায় অনশন করেন। বিজিএমইএর মধ্যস্থতায় ৬ ও ৭ আগস্ট দুই মাস এবং ১০ আগস্ট এক মাসের বকেয়া মজুরি ও ওভারটাইমের টাকা পান শ্রমিকরা। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল শীঘ্রই শ্রমিকরা ঈদ বোনাস পাবেন। কিন্তু বোনাসের বদলে তাদের বেকারত্বের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো। দুই বছর আগে তোবা গ্রুপের তাজরীন গার্মেন্টের অগি্নকাণ্ডে শতাধিক শ্রমিক প্রাণ হারান। কারখানায় আগুন লাগার পরও গেট খুলে না দেওয়ায় শ্রমিকদের অসহায়ভাবে প্রাণ হারাতে হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলো বলেছে, শ্রমিকরা অবৈধভাবে ধর্মঘট করেননি। তাদের তিন মাসের বেতন-বোনাস বকেয়া পড়ায় তারা অনশন করতে বাধ্য হন। এ বিষয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। তোবা গ্রুপের কারখানায় অগি্নকাণ্ডের কারণে ক্রেতাদেশগুলোতে দেশের পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। পাঁচটি কারখানা বন্ধের ঘটনা গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির যে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করব, তোবা গ্রুপের পাঁচটি কারখানা অবিলম্বে চালুর উদ্যোগ নিয়ে এ আশঙ্কার অবসান ঘটানো হবে।

সর্বশেষ খবর