শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ধর্ম

হজ ইসলামের প্রতীক

মুফতী মুতীউর রহমান

হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে হজের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- মানুষের মাঝে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে বাইতুল্লাহর হজ করা তার ওপর কর্তব্য। আর কেউ তা প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন। (আল ইমরান : ৯৭)। হজের ফজিলত সম্পর্কে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, যে আল্লাহর জন্য হজ করল এবং অশ্লীল কাজ করল না সীমা লঙ্ঘন ও করল না তার মা তাকে যেদিন জন্ম দিয়েছিল সেদিনের মতোই নিষ্পাপ হয়ে বাড়ি ফিরে এলো। (বুখারি : ১/২০৬)। হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরও ইরশাদ করেন, যদি কেউ হজ করে এবং তাতে কোনোরূপ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ না করে তবে তার পূর্ববর্তী গোনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (তিরমিজি ১/১৬৭)। অন্য একটি হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, তোমরা ধারাবাহিক হজ ও ওমরা করতে থাক, কারণ এ দুটি আমল দারিদ্র্য ও গোনাহ বিদূরিত করে। যেমন ভাটার আগুনে লোহা সোনা ও রূপার জং দূর করে আর কবুল হজের সওয়াব তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। (তিরমিজি ১/১৬৭)। ফরজ হওয়া সত্ত্বেও হজ না করার ব্যাপারে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অত্যন্ত কঠোর বাণী উচ্চারিত হয়েছে। শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, কেউ যদি এতটুকু পাথেয় ও সফরসংক্রান্ত সওয়ারির অধিকারী হয় যা তাকে বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে তদুপরি সে হজ না করে তবে সে ইহুদি হয়ে মারা যাক বা খ্রিস্টান হয়ে মারা যাক তাতে আল্লাহর কিছু যায় আসে না। ... (তিরমিজি : ১/১৫৬)। এ হাদিসে ফরজ হওয়ার পরও হজ না করে মারা গেলে সে মৃত্যুকে ইহুদি খ্রিস্টানের মৃত্যুর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এ ধরনের আরও বিভিন্ন হাদিসে ফরজ হওয়ার পরও হজ না করার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে। একটি হাদিসে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, যার হজের ইচ্ছা আছে সে যেন তাড়াতাড়ি করে। (মিশকাত, ১/২২২)।

হজ অত্যন্ত গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত, অন্যান্য ইবাদত থেকে হজ অনেক স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত। গোটা হজ, হজের সব আরকানই ইসলামের প্রতীক, মুসলিম উম্মাহর জাতীয় পরিচয়। হজই একমাত্র ইবাদত যার জন্য গোটা পৃথিবীর মুসলমানকে মক্কায় এসে জড়ো হতে হয়। এর কোনো বিকল্প নেই। অন্য ইবাদত তো স্ব-স্ব স্থানে বা অঞ্চলেই আদায় করা যায়। শুধু গতানুগতিকভাবেই নয় পরম ভক্তি-শ্রদ্ধার সঙ্গে হজের আরকানগুলো পালন করতে হবে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, এটাই আল্লাহর বিধান, কেউ আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত পবিত্র অনুষ্ঠানগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তার প্রতিপালকের কাছে এটাই উত্তম। (হজ : ৩০)। বছর ঘুরে আবারও হজ মৌসুম ফিরে এলো। এবার যারা পবিত্র হজে যাচ্ছেন তারা প্রেম, ভালোবাসা ও ভক্তি-শ্রদ্ধার সঙ্গে হজ পালন করবেন- এটাই প্রত্যাশা।

লেখক : খতিব মুহাম্মদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর