মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশন নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ করেছে। এতে সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা মূল বেতনের সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন রবিবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। স্মর্তব্য, স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতন সাতবার বাড়ানো হয়েছে। নতুন বেতন স্কেল কার্যকর হলে বর্তমান সরকারের আমলে মাত্র ছয় বছরে দুবার বেতন বাড়ানো হবে। সর্বশেষ বেতন বাড়ানো হয়েছিল ৬৩ শতাংশ। বর্তমান সরকারের আমলে যেসব প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন সম্মানজনকহারে বৃদ্ধি অন্যতম। অতীতে প্রতিটি সরকারের আমলে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলেও তার সুফল সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পকেটে কতটা পৌঁছেছে তা সংশয়মুক্ত নয়। বাড়ি ভাড়ায় বেপরোয়া উল্লম্ফন বাদে গত ছয় বছরে দ্রব্যমূল্য মোটামুটি স্থিতিশীল থাকায় বেতন বৃদ্ধি সরকারি কর্মচারীদের জীবনমান বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নেতিবাচক প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির প্রয়াস তাদের সৎভাবে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করলে তা হবে একটি বড় অর্জন। আমরা জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশকে স্বাগত জানালেও একই সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নাগরিকদের সেবা পাওয়ার সুযোগ সহজতর হবে এমনটিও দেখতে চাই। সরকারি অফিসগুলোতে উৎকোচ ছাড়া ফাইল না নড়ার যে ঐতিহ্য আছে তারও অবসান ঘটাতে হবে। নাগরিকদের সেবায় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী-কর্মকর্তা পদে যাতে সত্যিকারের যোগ্য প্রার্থীরা সুযোগ পায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি। অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে ক্যাডার সার্ভিসের বাইরে সরকারি চাকরি পাওয়া না পাওয়া বড় অঙ্কের উৎকোচের ওপর নির্ভরশীল। এ অভিযোগের অবসান ঘটাতে এবং সত্যিকারের যোগ্য লোকদের সরকারি চাকরি পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতেও সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর