বৃহস্পতিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতু প্রকল্প

পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে কাঙ্ক্ষিত গতিতে। অন্যসব অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে 'ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল' উপমার দেখা মিললেও পদ্মা সেতু প্রকল্পে সেটি অনুপস্থিত। এমনকি হরতাল-অবরোধ কোনো ছাপ ফেলতে পারেনি এ প্রকল্পের কাজে। ২০১৮ সালে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের লক্ষ্য নিয়ে দ্রুতগতিতে চলছে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। মূল সেতু, নদীশাসন, সংযোগ সড়কসহ প্রকল্পের সার্বিক কাজের ৩৪ শতাংশ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে মূল সেতুর কাজ এবং তা এ পর্যন্ত এক শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূল সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে প্রকল্প এলাকায় তিনটি ড্রেজার, তিনটি ফ্লোটিং ক্রেন, দুটি টাগবোট এবং একটি এঙ্কর বোট এনেছে। এ ছাড়া সেতুর সেন্টার লাইন বরাবর নেভিগেশন চ্যানেল ড্রেজিং শুরু হয়েছে। মূল সেতুর মাটি পরীক্ষা এবং সার্ভের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। ঠিকাদারের নিজস্ব স্থাপনা, অফিস ল্যাবরেটরি, ওয়ার্কশেড, শ্রমিকদের থাকার স্থান এবং জেটি নির্মাণের কাজও চলছে সমান গতিতে। টেস্ট পাইলিংয়ের স্টিল ফেব্রিকেশনের কাজ চলছে চীনের একটি ওয়ার্কশপে। পদ্ম সেতু প্রকল্পের জাজিরা অংশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। ২০১৬ সালের মধ্যেই সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে এমনটিই আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। জাজিরা অংশে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে ৩০ শতাংশ। একইভাবে মাওয়া অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে, যা শেষ করার কথা ২০১৭ সালের জুলাই মাসের মধ্যে। মাওয়া অংশের কাজ এ পর্যন্ত প্রায় ২২ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এগিয়ে চলছে নদীশাসনের কাজ যা ২০১৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। প্রকল্পের জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজও চলছে সমানতালে। এ পর্যন্ত পুনর্বাসনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৬৫ ভাগ। পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে। যেখানে প্রকল্পের জন্য কোনো টাকাই তারা বরাদ্দ দেয়নি, সেখানে দুর্নীতির পরিকল্পনা করা হচ্ছে এমন যুক্তি তুলে তাদের সরে যাওয়া ছিল জাতির জন্য এক বিড়ম্বনার ঘটনা। সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা যথা সময়ে বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। কাজও চলছে সেভাবে। আমরা আশা করব, দেশের অন্য সব অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়নেও একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর