শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

মরণের পরে কি হবে

মুফতি আবু হোরায়রা রায়পুরী

প্রতিটি মানুষের ইহকালীন জীবন শেষ হওয়ার পর যে জীবন শুরু হয়, তাকে আলমে বরযখ বা কবরের জীবন বলা হয়। কবরের জীবন কারও জন্য অনেক সুখের আবার কারও জন্য অনেক দুঃখের। তবে তা নির্ভর করে প্রতিটি মানুষের দুনিয়ার আমলের ওপর। যাদের দুনিয়ার আমল ভালো হয়, তাদের কবরের জীবন সুখের হয়। আর যাদের দুনিয়ার আমল ভালো নয়, তাদের কবরের জীবন দুঃখের হয়।

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, প্রতিটি মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার পর তার কাছে কালো বর্ণের নীল চক্ষু বিশিষ্ট দুজন ফেরেশতা আসেন। তাদের একজনকে মোনকার ও অপরজনকে নাকির বলা হয়। তারা মৃত ব্যক্তিকে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার প্রতিপালক কে? তোমার ধর্ম কি? এ লোকটি কে যাকে তোমার কাছে পাঠানো হয়েছিল? মৃত ব্যক্তি মুমিন হলে উত্তর দেবে! আমার প্রতিপালক আল্লাহ, আমার ধর্ম ইসলাম, তিনি মুহাম্মদ (সা.)। তখন আল্লাহতায়ালা বলবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। অতএব তোমরা তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হবে। সে দরজা দিয়ে জান্নাত থেকে শান্তি ও সুঘ্রাণ আসতে থাকবে এবং যতদূর দৃষ্টি যায়, ততদূর পর্যন্ত তার কবরকে প্রশস্ত করে দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে মৃত ব্যক্তি যদি পাপিষ্ঠ হয়, তাহলে তাকে উক্ত প্রশ্নগুলো করা হলে সে বলবে, আফসোস! আফসোস! আমি তো কিছুই জানি না। অতঃপর আসমান থেকে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দেবে, এই ব্যক্তি মিথ্যা বলেছে। অর্থাৎ সব কিছুই তার জানা আছে। কিন্তু দুনিয়াতে সে আল্লাহকে রব বলে মানত না, দীনের ওপর চলত না এবং মুহাম্মদ (সা.) কে নবী হিসেবে স্বীকার করত না। তার নিচে আগুনের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তার জন্য জাহান্নামের দরজা খুলে দাও। সে দরজা দিয়ে জাহান্নাম থেকে গরম বাতাস আসতে থাকবে। অতঃপর জমিনকে বলা হবে, 'এ ব্যক্তিকে চাপ দাও।' ফলে জমিন তাকে এমনভাবে চাপ দেবে, একদিকের পাঁজর অপর দিকে চলে যাবে। কিয়ামত পর্যন্ত সে উক্ত আজাবের মধ্যে অবস্থান করতে থাকবে। এ ছাড়াও গোনাহগারদের সাপ-বিচ্ছু, কীটপতঙ্গের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে।

তাই রসুল (সা.) বলেন, নিশ্চয় কবর কারও জন্য জান্নাতের বাগান হবে অথবা কারও জন্য জাহান্নামের গর্ত হবে।

নবী কারিম (সা.) আরও বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন ২০ বার মরণের কথা স্মরণ করে, আল্লাহতায়ালা তাকে মরণের পর শহীদের মর্যাদা দান করবেন। আল্লাহতায়ালা আমাদের মুমিন মুসলমান হয়ে কবরে যাওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন

লেখক : ইস্পাহানী দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা, আগানগর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর