শনিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

সেশনজট নিরসনে-

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০১৮ সাল নাগাদ সেশনজট মুক্ত করার লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে নেওয়া ক্র্যাশ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রায় প্রতিদিন সকালে পাঠ্যদান ও বিকালে পরীক্ষা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমনকি শুক্রবারও একবেলা পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ জন্য শিক্ষকদের আগামী দুই বছর পাওনা ছুটি ভোগ থেকে বিরত থেকে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট যখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ভোগান্তি সৃষ্টি করছে তখন এ ঘোষণা আশা জাগানিয়া বললেও অত্যুক্তি হবে না। স্মর্তব্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট নিরসন ও অব্যবস্থাপনার অবসানে এর কাঠামো ভেঙে সরকারি কলেজগুলোকে আগের মতো বড় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নির্দেশনা দেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সক্রিয় হওয়ার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিজেদের স্বকীয় অস্তিত্ব রক্ষায় এ ঘোষণা দেওয়া হলো। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করার পাশাপাশি এটি শিক্ষা ক্ষেত্রে ধনী-গরিবের বৈষম্য প্রকট করে তুলছিল। সেশনজটের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়ার উপক্রম হচ্ছিল। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সময়মতো পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে ঢোকার সুযোগ পেলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হতো সেশনজটের কারণে। ফলে আর্থিক দিক থেকে যাদের সঙ্গতি নেই তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় পড়াশোনা করে ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে পড়ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর সেশনজট নিরসনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ তাদের অস্তিত্ব রক্ষার অনুষঙ্গ বলে বিবেচিত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে আভাস দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এখনো বহাল রয়েছে, তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ সুবিধাজনক বিবেচিত হলে সেটি গ্রহণ করার কথা ভাবা হবে। আমরা মনে করি, শুধু নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নয়, শিক্ষার্থীদের প্রতি নৈতিক দায়িত্ব পালনেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষকদের পাঠ্যদান ও সময়মতো পরীক্ষা সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে।

সর্বশেষ খবর