সোমবার, ৯ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

অপ্রয়োজনীয় ওষুধ আমদানি

ওষুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং ইতিমধ্যে ওষুধ রপ্তানিকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভও করেছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোতে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশেও যে মানসম্মত ওষুধ তৈরি হয় এটি তার স্বীকৃতিও বটে। অথচ বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় এমন ওষুধও দ্বিগুণ বা আরও বেশি দামে বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০-২৫টি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানির নামে গণডাকাতি করছে। মুনাফা লাভের মতলবে তারা অপ্রয়োজনীয় ওষুধও আমদানি করছে। আজকের যুগে ওষুধের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বনির্ভর এমন কোনো দেশ নেই। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে শুরু করে মালদ্বীপ-ভুটানের মতো ছোট দেশ সবাই ওষুধ আমদানি করে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। দেশের চাহিদার সিংহভাগ ওষুধই এখন দেশে উৎপাদিত হয়। তারপরও সংকটাপন্ন রোগীর জীবন রক্ষা এবং জটিল রোগের চিকিৎসায় এখনো বেশ কিছু ওষুধ আমদানি করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে সেসব ওষুধের নাম দেওয়া হয় যেসব ওষুধ দেশে উৎপাদিত হয় এবং সেগুলোর মান নিয়ে সংশয় নেই, সেসব ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা একদিকে যেমন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় ঘটানো অন্যদিকে রোগীদের পকেট কাটা। ওষুধ আমদানিকারকদের জন্য তা বাড়তি অর্থ আয়ের সুবিধা করে দিলেও রোগী বা তার অভিভাবকদের ভোগান্তিই বাড়ে। নীতিগতভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ আমদানির বিরোধিতার সুযোগ না থাকলেও এক্ষেত্রে সুষ্ঠু নীতিমালা থাকা দরকার। প্রয়োজনীয় ওষুধ সন্তোষজনক মাত্রায় আমদানি গ্রহণযোগ্য হলেও যেগুলোর আমদানির প্রয়োজন নেই সেসব ওষুধ যাতে আমদানি না হয় সে ব্যাপারে নজরদারি থাকা দরকার। একই সঙ্গে দেশে উৎপাদিত ওষুধের মান সম্পর্কে সংশয় থাকলে সে ব্যাপারেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে আকাশছোঁয়া দুর্নীতির সুযোগ রয়েছে। উৎকোচের বিনিময়ে আমদানির সুযোগ পাওয়া যায় এমন অভিযোগও প্রকট। এ ব্যাপারে সরকারের কড়া নজর একান্তভাবেই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর