রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

সুন্দর করে কথা বলা রসুল (সা.)-এর সুন্নাত

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ছিলেন শ্রেষ্ঠতম সুভাষী। তিনি সুন্দর করে কথা বলতেন। হৃদয়স্পর্শী কথা বলতেন। তাঁর কথা শুনলে শ্রোতার মনের কষ্ট দূর হয়ে যেত, মুখে হাসি ফুটত। তিনি কখনো মন্দের জবাবে মন্দ বলেননি। তিনি সবসময় মন্দ কথার জবাবে সুন্দর কথা বলতেন। তিনি ছিলেন সত্যভাষী, স্পষ্টভাষী, স্নিগ্ধভাষী, দৃঢ়ভাষী, শুদ্ধভাষী, সুভাষী। তাই তিনি ছিলেন সব মানুষের সেরা মানুষ।

সাহাবায়ে কেরামরা সুভাষী ছিলেন। সুন্দর কথা দিয়ে তারা বিশ্বকে জয় করেছিলেন। যেসব মনীষী বিশ্বজোড়া জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তারা সবাই সুভাষী ছিলেন। পৃথিবীতে যত আদর্শই প্রচার হয়েছে, তা হয়েছে সুন্দর কথা দিয়ে, সুবচন দিয়ে। অসুন্দর কথা ও কুবচন দিয়ে কখনো কোনো আদর্শ প্রচারিত হয়নি, প্রতিষ্ঠিতও হয়নি। বিশ্বের সব ভালো কাজই মানুষের মন জয় করে করতে হয়। আর সুন্দর কথার চেয়ে মানুষের মন জয় করার মোক্ষম কোনো উপায় নেই। সুন্দর কথায় মানুষের মনোকষ্ট দূর হয়। হতাশা, নিরাশা, দুশ্চিন্তা দূর হয়। মন খুশি, সন্তুষ্ট, তৃপ্ত ও সচেতন হয়, বিবেক জাগ্রত হয়। আবেগ, উৎসাহ, উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। রাগ নিভে যায়, গোস্সা দমে যায়। সুন্দর করে কথা বলার ব্যাপারে মহান প্রতিপালক বলেছেন, 'হে ইমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল' (সূরা আহযাব : ৭০)। 'মানুষের সঙ্গে ভালো কথা বল, সুন্দর কথা বল' (সূরা বাকারা : ৮৩)। 'তাদের সঙ্গে দয়া, সহানুভূতি ও নম্রভাবে কথা বল' (সূরা বনি ইসরাইল : ২৮)। 'তাদের সঙ্গে সম্মানের সঙ্গে কথা বল' (সূরা বনি ইসরাইল : ২৩) 'তাদের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হয়ও না। তাদের উপদেশ দাও এবং তাদের সঙ্গে হৃদয়স্পর্শী কথা বল' (সূরা নিসা : ৬৩)।

মহান আল্লাহর এই অমৃতবাণীর দিকে একটু নজর দিলেই দেখতে পাব মহান আল্লাহ সুন্দর, উত্তম ও পূত-পরিচ্ছন্ন কথা এবং সুবচনের প্রতি কতটা গুরুত্বারোপ করেছেন। সুন্দর কথা বলা প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন, তিনি সুন্দর কথাকেই পছন্দ করেন আর অসুন্দর কথাকে করেন ঘৃণা।

সুভাষী হওয়া যেহেতু রসুল (সা.)-এর সুন্নাত সেহেতু আমাদের সবারই উচিত সুভাষী হওয়ার চেষ্টা করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সে তাওফিক দিন।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাচ্ছিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

 

 

সর্বশেষ খবর