বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
ভেষজ

যষ্টিমধু

যষ্টিমধু বহুবর্ষজীবী গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর কাণ্ড বহু শাখাবিশিষ্ট, তিন-চার ফুট লম্বা, সরল ও নরম হয়ে থাকে। এর পাতা দণ্ডের উভয় দিকে সমান্তরালভাবে বিন্যস্ত এবং দণ্ডের অগ্রভাগে একটি পাতা থাকে। এর পাতাগুলো ডিম্বাকৃতির, সবুজ ও মসৃণ। পুষ্পদণ্ডের উভয় দিকে হালকা গোলাপি বর্ণের ফুল ফোটে। এর প্রতিটি ফলে দুই-পাঁচটি বীজ থাকে। এর মূল বেশ মোটা, গোলাকার ও মিষ্টি স্বাদযুক্ত। যষ্টিমধুর প্রধান কার্যকর রাসায়নিক উপাদানটি হলো ট্রাইতারপিনয়েড স্যাপোনিন গ্লিসাইরিজিন (গ্লিসাইরিজিনিক অ্যাসিডের পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম লবণের মিশ্রণ)। এ ছাড়াও এতে রয়েছে গ্লাবরানিন এ ও বি, গ্লিসাইরেটল, গ্ল্যাবরোলাইড, আইসোগ্ল্যারোলাইড নামে ট্রাইতারপিনয়েড স্যাপেনিন; ফরমোনোনেটিন, গ্ল্যাবরোন, নিওলিকুইরিটিন, হিসপা-গ্ল্যাবরিডিন এ ও বি নামে আইসোফাবন; হারনিয়ারিন, আম্বিলিফেরন নামক কৌমারিন এবং আনোসেরিন, এমাইরিন, স্টিগমাস্টেরল নামক ট্রাইতারপিন স্টেরল ইত্যাদি।

ঔষধি গুণাবলির ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো- যষ্টিমধুতে রয়েছে আলসার প্রতিরোধী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান। তাই এটি এসপিরিন-জাতীয় ওষুধের প্রভাবে সৃষ্ট আলসারসহ সব ধরনের আলসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে কার্যকর। যষ্টিমধু গ্যাস্ট্রিক মিউকোসা থেকে মিউকাস রসসহ আলসার প্রতিরোধী অন্যান্য রসের নিঃসরণ বাড়ানোর মাধ্যমে আলসার প্রতিহত করে। শ্বাসনালির প্রসারণ ও কফ নিঃসরণে যষ্টিমধুতে বিদ্যমান গ্লিসাইরিজিন শ্বাসনালি প্রসারিত করে এবং ভিতরে জমে থাকা কফ নরম করে বের করে দেয়। এটি ফুসফুসের ব্রংকিয়াল পেশির সংকোচন প্রতিহত করে। তাই এটি কণ্ঠস্বরের কর্কশভাব দূর করে এবং যেসব ভাইরাস শ্বসনতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি ও অতিরিক্ত শ্লেষ্মা তৈরি করে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা থেকে জানা যায়, এটি সার্স (SARS) রোগ প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

-ডা. আলমগীর মতি

 

 

সর্বশেষ খবর