বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পে অশনি সংকেত

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এক হতে হবে

প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১২টি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ চুক্তিবলে যুক্তরাষ্ট্রে বিনা শুল্কে পোশাক রপ্তানির সুযোগ পাবে ভিয়েতনাম। মেকং নদীর এ দেশটি তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় এ চুক্তি বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে কিনা তা ইতিমধ্যে বড় মাপের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম উভয় দেশকে গড়ে প্রায় ১৬ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করতে হয়। নতুন চুক্তির ফলে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রে বিনা শুল্কে পোশাক রপ্তানির সুযোগ পাবে। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য এটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন এ উদ্বেগের বিষয়টি নাকচ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের টিপিপি চুক্তিতে বাংলাদেশের ভয়ের কিছু নেই। এর আগেও দেশের পোশাক খাতে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। রানা প্লাজা ধসের পর শ্রমমান উন্নয়নের যে চ্যালেঞ্জ ছিল, তা পূরণ করা হয়েছে। জিএসপি স্থগিতের পরও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এ ছাড়া টিপিপি চুক্তির সুবিধা নিতে গেলে ভিয়েতনামকে উচ্চমানের শ্রম ব্যবস্থাপনা, শ্রম অধিকার ও পরিবেশের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড অর্জনের মতো তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। এ শর্ত পালন করে তারা বাংলাদেশের চেয়ে সস্তায় পোশাক রপ্তানি করতে পারবে না। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি প্রণয়নের প্রস্তুতিলগ্নে গত জুলাইয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম। ইতিমধ্যে দেশটি মার্কিন বাজারে দ্বিতীয় প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম উভয়েই ১৬ শতাংশ হারে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক দিয়ে থাকে। কিন্তু টিপিপি বাস্তবায়িত হলে ভিয়েতনাম শুল্ক ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির সুবিধা পাবে, যা বাংলাদেশের পোশাক খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবিভর্‚ত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ১২টি দেশের টিপিপি চুক্তি বাংলাদেশকে যে ভাবিয়ে তুলেছে তা একটি বাস্তবতা। বাংলাদেশ অতীতে তৈরি পোশাকশিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যে সামর্থ্যরে পরিচয় দিয়েছে, তাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের একযোগে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় লড়তে হবে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থেই বেছে নিতে হবে টিপিপি-পরবর্তী বাস্তবতায় কীভাবে এগোনো যায় সেই সঠিক পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর