শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস

এ সাফল্য আশাজাগানিয়া

সন্তান প্রসবকালে মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশের সাফল্য এখন বিশ্বজুড়ে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো তো বটেই, বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশ চীন ও এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশ জাপানের স্থানও বাংলাদেশের পেছনে। ১৯৯০ সালে দেশে প্রতি লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে যেখানে ৫৭০ জন মায়ের মৃত্যু হতো সর্বশেষ জাতিসংঘ প্রকাশিত মাতৃমৃত্যু জরিপে তা ১৭০-এ নেমে এসেছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের ‘স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড মাদার ২০১৫’ জরিপে বিশ্বের ১৭৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের মায়েদের স্বাস্থ্যগত অবস্থান ধরা হয়েছে ১৩০। এ তালিকায় ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চীন, জাপানসহ এশিয়ার অন্য দেশগুলোকে বাংলাদেশ পেছনে ফেলতে সমর্থ হয়েছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ এ হার ১৪৩-এ নামিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। আশার কথা, এমডিজির মেয়াদকালে প্রতি বছর গড়ে ৩ শতাংশ হারে মাতৃমৃত্যু কমানোর লক্ষ্য থাকলেও বাংলাদেশ ৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ হারে মাতৃমৃত্যু কমানোর সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশে মাতৃস্বাস্থ্য সম্পর্কে আগের চেয়ে সচেতনতা বেড়েছে। নারী শিক্ষা গ্রহণের হার বৃদ্ধি, বাল্যবিয়ের হার হ্রাস, প্রযুক্তি ও খাদ্যাভ্যাসের উন্নয়ন সব মিলিয়ে মাতৃস্বাস্থ্যের এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাতৃমৃত্যু হার কমাতে তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিতে হয়। এগুলো হলো- পরিবার পরিকল্পনা, দক্ষ প্রশিক্ষিত কর্মীর মাধ্যমে সন্তান জন্মদান এবং প্রসূতির সঠিক যত্ম নেওয়া। আইসিডিডিআরবির গবেষণামতে, ২০০১ সালে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ১২ হাজার ১১৪ জন মায়ের মৃত্যু হয়। এ হিসেবে ২০১০ সালে মাতৃমৃত্যু ১৪ হাজার ৩১০ জনে দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু বাস্তবে মাতৃমৃত্যু হ্রাস পেয়ে ২০১০ সালে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৮৪৮ জনে। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ বলছে, ২০১৩ সালে দেশে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত আগের বছরের চেয়ে দশমিক শূন্য ৬ কমে ১ দশমিক ৯৭ হয়েছে। মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশের সাফল্য আশাজাগানিয়া হলেও এতে আÍপ্রসাদের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। সাফল্যের এ ধারাকে এগিয়ে নিতে সরকারি, বেসরকারি পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও যত্মবান হতে হবে। সেটিই সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর