বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

বায়জানটাইনের বিরুদ্ধে অভিযান

ওসমান এশিয়া মাইনরের অপরাপর তুর্কি রাজ্যের সঙ্গে, যেমন আনাতোলিয়ার সালতানাত ও শক্তিশালী কারামানলী যুদ্ধে লিপ্ত না হয়ে বায়জানটাইনদের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ১৩০১ খ্রিস্টাব্দে কুয়ুন হিসারের যুদ্ধে ওসমান গ্রিক সেনাপতি মুজালোনের বিশাল বাহিনীকে পরাজিত করেন। গ্রিক সাম্রাজ্যের কিয়দংশ তার দখলে আসে। পরাজয়ের গ্লানি মোচনের জন্য গ্রিক সম্রাট মাইকেল প্যালিওলোগাস পরবর্তী বছর এক বিশাল বাহিনী নিয়ে ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযান করেন, কিন্তু অযোগ্য ও উচ্ছৃঙ্খল স্লাভবাহিনী তুর্কিদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এর ফলে গ্রিক সম্রাটকে এশিয়া মাইনরের রাজ্য হারাতে হয় এবং তুর্কি সুলতানদের আধিপত্য বৃদ্ধি পায়। এশিয়া মাইনরে ওসমানী তুর্কি শক্তির অভ্যুত্থান একটি নবযুগের সূচনা করে এবং ওসমানের পুত্র অরখানের নেতৃত্বে গ্রিকদের অধিকৃত দুর্গগুলো দখল করা হয়। গ্রিক সাম্রাজ্যের প্রখ্যাত নগরী ব্রুসা এবং শক্তিশালী ঘাঁটি আক-হিসার ও খোজা-হিসার ওসমানের কর্তৃত্বাধীনে আসে। সেলজুক ও গ্রিক শক্তির দুর্বলতা ও পতনের সুযোগে অটমান তুর্কিদের আধিপত্য বিস্তৃতি লাভ করে। উত্তরদিকে ওসমান কৃষ্ণসাগর ও বসফোরাস দখল করেন এবং তার সুযোগ্য সেনাপতি কারা আলী মর্মরা প্রণালিতে অবস্থিত কালোলিমনি দ্বীপ দখল করেন। এর ফলে গ্রিকদের জলপথে ব্রুসা থেকে কনস্টান্টিনোপল দমনের পথটি অবরুদ্ধ হয়ে যায়। এ সময় মোঙ্গলরা পূর্ব সীমান্তে অভিযান করলে অরখান দৃঢ়তার সঙ্গে তা প্রতিহত করেন কিন্তু গ্রিকদের সঙ্গে মোঙ্গলদের অটমান সাম্রাজ্যের প্রতি হুমকিস্বরূপ ছিল।

পরবর্তীকালে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত ইলখানী সুলতান গাযান খান অটমান তুর্কিদের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করলে গ্রিকদের তুর্কিবিরোধী জোট ব্যর্থ হয়। ওসমানের রাজত্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব ছিল গ্রিকদের কাছ থেকে ব্রুসা অধিকার। ১৩২৬ খ্রিস্টাব্দে দীর্ঘকাল অবরোধের পর তিনি গ্রিক সেনাপতি এভরেনসকে পরাজিত করে ব্রুসা দখল করেন। ব্রুসা উদীয়মান অটমান তুর্কি শক্তির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। এভরেনস ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ওসমানের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।

সর্বশেষ খবর