বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কারবালা : মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের লড়াই  

মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল খালেক

কারবালার স্মৃতিমণ্ডিত ১০ মহররম আমাদের মাঝে আগত প্রায়। ১০ মহররম বা পবিত্র আশুরা আমাদের ধর্মীয় জীবনে মহিমান্বিত দিন হিসেবে পরিচিত বহু আগে থেকেই। এই দিনে আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। মানুষ সৃষ্টিও হয়েছে এই দিনে। আল্লাহর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে জান্নাত থেকে এই দিনে হজরত আদম ও হাওয়া (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। তাদের তওবা কবুল করা হয় এই দিনে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) থেকে হজরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত অসংখ্য নবীর সঙ্গে ১০ মহররম বা আশুরার যোগসূত্র হয়েছে। রসুল (সা.)-এর উম্মতদের কাছে দিনটি আরও একটি কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)সহ ৭০ জনেরও বেশি আওলাদে রসুল এবং তাঁদের অনুসারীদের শাহাদাতবরণের দিন পবিত্র আশুরা। আজ থেকে প্রায় পৌনে ১৪শ বছর আগে ইরাকের কারাবালা মরুপ্রান্তরে তাঁরা শহীদ হন ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার ইসলামবিরোধী হুকমতকে ঠেকানোর যুদ্ধে। হজরত আলী (রা.)-এর আমলে সমঝোতা হয় তাঁর পর হজরত মুয়াবিয়া (রা.) খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তারপর খেলাফত যাবে হজরত হোসাইন (রা.)-এর কাছে। এ সমঝোতার প্রতি সম্মান না দিয়ে মদ্যপ ও লম্পট পুত্র ইয়াজিদকে খেলাফতের উত্তরাধিকার করা হলে প্রতিবাদ ওঠে। হজরত হোসাইন (রা.) জীবন দিয়ে হলেও ইসলামী হুকমতের পবিত্রতা রক্ষায় ব্রতী হন। আওলাদে রসুল (সা.)-এর প্রতি বিদ্বেষ মনোভাবাপন্ন ইয়াজিদ নবী দৌহিত্র হজরত ইমাম হাসান (রা.)কে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করে। আরেক দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-কে কারবালার প্রান্তরে দীর্ঘ এক মাস অবরুদ্ধ করে এক অসম যুদ্ধে পরিবার-পরিজনসহ হত্যা করা হয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের লড়াইয়ে রচিত হয় নতুন ইতিহাস। হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) শাহাদাতবরণ করে মুসলমানদের শিক্ষা দেন জীবনের চেয়েও আদর্শ অনেক বড়।  কারবালায় ৭০ জনেরও বেশি আওলাদের রসুল এবং তাঁদের অনুসারীদের জীবন দান মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে মুসলমানদের যুগ যুগ ধরে অনুপ্রাণিত করবে।

                লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর