শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কারবালার শিক্ষা

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

কারবালার শিক্ষা

কারবালার ইতিহাসে কেয়ামত পর্যন্ত আগত মুসলমানদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা। ইতিহাসের এই রক্তাক্ত অধ্যায় একেক ঐতিহাসিক একেকভাবে উপস্থাপন করেছেন। দৃষ্টভঙ্গির ভিন্নতায় ঘটনাপ্রবাহ নানাভাবে মূল্যায়িত হয়েছে। ইসলামী ইতিহাসের এই বেদনাবিধুর পাতায় মুসলিম জাতির কর্ণধারদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষা। প্রিয়নবী (সা.)-এর কলিজার টুকরা, হজরত ফাতেমা (রা.)-এর নয়নমণি, হজরত হোসাইন (রা.) বিশ্ববাসীর জন্য রেখে গেছেন পথের দিশা। বিশেষভাবে যারা মুসলিম উম্মাহকে নেতৃত্ব দিবেন তাদের জন্য কারবালা প্রান্তরে প্রিয় নবীজীর দৌহিত্রের স্বপ্ন জীবন চলার পথে ত্যাগ ও আÍত্যাগের আলোর মশাল হয়ে থাকবে। ৬১ হিজরির ২ মহররম। হজরত হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এবং সঙ্গে আগত অন্য সঙ্গীরা কুফাবাসীর প্রতারণা ও ওয়াদা ভঙ্গের বিষয়টি পুরাপুরি বুঝতে পারলেন। তারা সেখানে হুর ইবনে এজিদের সহস্রাধিক সেনাবাহিনী দ্বারা বেষ্টিত হলেন। ইমাম হোসাইন (রা.) তখন কারবালা প্রান্তরে তাঁবু স্থাপন করলেন। ৬১ হিজরির ৩ মহররম। এজিদ কর্তৃক নিযুক্ত কুফার গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ হজরত হোসাইন (রা.)-এর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য উমার ইবনে সা’দকে চার হাজার সৈন্যসহ কারবালায় পাঠায়। উমার এসে হজরত হোসাইন (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে এজিদের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তার হাতে বায়াত হওয়ার আহ্বান জানায়। হোসাইন (রা.) তাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, হে উমার! আমি এজিদের হাতে বায়াত হওয়ার পরিবর্তে মৃত্যুকে স্বাগত জানাই। ৭ মহররম আরও পাঁচশত অশ্বারোহী সৈন্য পাঠানো হলো ফোরাত নদীর তীরে। যাতে হোসাইন (রা.) নদীর পানি নিতে না পারেন এবং পানির পিপাসায় কাতর হয়ে অনন্যোপায় অবস্থায় এজিদের শাসন মেনে নেন। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টাও বৃথা যায়। ৯ মহররম বৃহস্পতিবার যুদ্ধের সূচনা হলো। অবশেষে ১০ মহররম কারবালা প্রান্তরে ফোরাত নদীর তীরে হজরত হোসাইন (রা.) আল্লাহর দরবারে নিজের জীবন উপহার দিলেন। মহান আল্লাহর কাছে শাহাদাতের নজরানা পেশ করলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রতি যুগে জালিম অপশক্তির সামনে সত্য ও ন্যায়ের পথিকদের জন্য করণীয় বিষয় সম্পর্কে পথ বাতলে দিলেন।

                লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর