শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা  

মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হোক

সড়ক দুর্ঘটনা আর কত প্রাণ কেড়ে নেবে এ প্রশ্ন সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়তই ভাবিয়ে তুলছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। সরকারি হিসাবেই গত ২১ বছরে দেশে ৮৩ হাজার ৭৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬ হাজার ৩৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৫৫ জন। বেসরকারি পরিসংখ্যান মতে, দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র যেমন অনেক বেশি তেমন বেশি হতাহতের হারও। সড়ক দুর্ঘটনায় একের পর এক প্রাণহানি ঘটলেও দুর্ঘটনা বন্ধে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনায় সিংহভাগ ক্ষেত্রে চালক ছাড় পেয়ে যায় আইনের ফাঁক গলে। পুলিশি তদন্তে বোধগম্য কারণে অপরাধীদের দোষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাপা দেওয়া হয়। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য রাস্তাঘাটের অব্যবস্থা অনেকাংশে দায়ী। সড়ক নিরাপত্তার সবচেয়ে শক্তিশালী সরকারি সংস্থা জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল। পাঁচ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৪ সদস্যের এই কাউন্সিলের অধীনে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে গঠিত ৯ সদস্যের উপ-কমিটি চার দফায় সভা করে ৮৬টি বিভিন্ন মেয়াদি সুপারিশ জমা দেয়। এর মধ্যে ৫২টি স্বল্প, ১৪টি মধ্য ও ২০টি দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ। গত তিন বছরে বাস্তবায়নের আলো পড়েছে মাত্র একটি সুপারিশে। মহাসড়কে তিন চাকার ও অযান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়েছে, তাও আংশিকভাবে। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশের মহাসড়কে ১৪৪টি ব্ল্যাক স্পট চিহ্নিত করে সেগুলো দূর করতে ১৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। কিন্তু এ প্রকল্পের কাজ মাঠ পর‌্যায়ে এখনো শুরু হয়নি। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৯৩৯ সালের ভারতীয় মোটরযান আইনে কিছুটা পরিবর্তন এনে ‘মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩’ প্রণয়ন করা হয়। মান্ধাতার আমলের সেই আইনে পরিচালিত হচ্ছে দেশের পরিবহন খাত। ৩২ বছরেও সংশোধন হয়নি এ অধ্যাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে পরিবহন খাতে যে পরিবর্তন এসেছে তা ওই অধ্যাদেশ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের জীবনের যে অপচয় ঘটাচ্ছে তা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত হতে পারে না। মানুষ ঘর থেকে সুস্থভাবে বের হয়ে লাশ হয়ে কিংবা পঙ্গু হয়ে ফিরবে এটি চ‚ড়ান্তভাবেই অনাকাক্সিক্ষত। রাজপথে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা রোধে এখনই উদ্যোগী হতে হবে। রাস্তাঘাটের সংস্কারের পাশাপাশি পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণও নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর