শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গরু আমদানিতে জটিলতা

দেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিক

গরু রপ্তানি বন্ধ করে ভারত নিজেই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। গরুর খামার ছিল যাদের জীবিকা এমন কয়েক লাখ লোক বেকার হয়ে পড়েছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হঠাৎ করে কয়েক লাখ লোক বেকার হয়ে পড়ায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে নিদারুণ কষ্ট। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে তাদের অনেকে জীবিকার জন্য অন্যায় পথও বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। হিন্দুস্তান টাইমসের এক সাংবাদিকের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর ১৭ থেকে ১৮ লাখ গরু ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হতো। এ গরু রপ্তানি হতো অনানুষ্ঠানিকভাবে। যে প্রক্রিয়ায় এ রপ্তানি হতো আইনি ভাষায় তাকে বলা হতো পাচার। বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিকভাবে গরু রপ্তানি হলেও এ জন্য আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। অনানুষ্ঠানিক এ রপ্তানির ফলে তা সরাসরি কর-মূসকের আওতায়ও আসত না। বাংলাদেশে গরু রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় বিজেপি সরকারের এক সিদ্ধান্তবলে। এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে সংকটের আশঙ্কাও সৃষ্টি করে। মনে করা হয়েছিল গত ঈদুল আজহায় কোরবানির গরু দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠবে। কিন্তু তা তো হয়নি, বরং আমদানি বন্ধ হওয়ায় দেশের প্রতিটি এলাকায় গরুর খামার প্রতিষ্ঠায় উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধের সুযোগও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। মানুষের বদলে গরুর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত দায়বোধের কারণেই তা রপ্তানি বন্ধের পাশাপাশি দুয়েকটি বাদে ভারতের প্রায় সব রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়। এ অবিবেচক সিদ্ধান্ত ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে উসকে দিচ্ছে। গরু জবাইয়ের কল্পিত অভিযোগে হত্যাকাণ্ডও সংঘটিত হয়েছে। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের যে উপাদান ভারতের জাতীয় সংহতির সবচেয়ে বড় শক্তি তা দুর্বল করে দিচ্ছে। তবে আমরা এটিকে ভারতের নিজস্ব বিষয় বলে ভাবতে চাই। গরু আমদানি বন্ধ দেশের গ্রামীণ জনপদে কর্মসংস্থানের যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে তা যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর