মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মন্ত্রিত্ব বনাম মস্তানি

উপমন্ত্রীর অশোভন কাণ্ড দুর্ভাগ্যজনক

মন্ত্রিত্ব আর মস্তানি যে এক নয় এটি কখনো কখনো কারও কারও পক্ষে বুঝে ওঠা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। উপলব্ধির এ সীমাবদ্ধতা স্বভাবতই ডেকে আনে বিড়ম্বনা। যেমনটি ঘটেছে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের ক্ষেত্রে। দেশের একসময়ের এই কৃতী ফুটবলারকে উপমন্ত্রী করা হয় ক্রীড়াঙ্গনে অনুপ্রেরণা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। কিন্তু মন্ত্রিত্বকে তিনি মস্তানি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন কিনা, এ প্রশ্ন এখন জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছে সব মহলে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি নিজের মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের দফতরে যেভাবে ভাঙচুর চালিয়েছেন এবং একজন সিনিয়র সহকারী সচিবের দফতরে যেভাবে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন তা মন্ত্রী তকমাধারী কারোর জন্য মানানসই কিনা, তা প্রশ্ন হয়েও দেখা দিয়েছে। ঘটনার উদ্ভব জাতীয় যুব দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যানারে উপমন্ত্রীর নাম না থাকা নিয়ে। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের ওই অনুষ্ঠানের ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিল প্রতিমন্ত্রীর নাম। উপমন্ত্রীসহ যারা বিশেষ অতিথি ছিলেন তাদের নাম না থাকায় অনুষ্ঠানস্থল থেকে উপমন্ত্রী ক্ষুব্ধভাবে নেমে এলে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফিরিয়ে নেন। বিপত্তি বাধে পুরস্কার বিতরণের সময়। প্রতিমন্ত্রী পুরস্কার বিতরণ করবেন মাইকে এ ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে আসেন মন্ত্রণালয়ে। তারপর যুগ্ম সচিবের ৫০১ নম্বর রুমে এসে কম্পিউটার ও ফাইলপত্র ছুড়ে নিজের ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। তারপর সিনিয়র সহকারী সচিবের কক্ষে লাগান তালা। ওই দুই কর্মকর্তা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের অনুষ্ঠানে থাকায় ক্রোধের অন্য রকম বহিঃপ্রকাশ থেকে সম্ভবত বেঁচে যান। উপমন্ত্রী অবশ্য এসব ঘটনাকে ‘তেমন কিছু’ বলে ভাবছেন না। সাংবাদিকদের কাছে অবশ্য স্বীকার করেছেন ভুল বোঝাবুঝির কারণে এসব হয়েছে। মন্ত্রীর কাছে তেমন কিছু বলে মনে না হলেও দেশবাসীর কাছে এ ঘটনা লজ্জার বলে বিবেচিত হয়েছে। সরকারে এমন ধরনের মন্ত্রীর উপস্থিতি থাকা উচিত কিনা, সে প্রশ্নটিও তাদের মনে উঁকি দিচ্ছে। তাদের দৃষ্টি এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর