মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইলমের গুরুত্ব ও ফজিলত

মুফতি শরিফুল ইসলাম

আল্লাতায়ালা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন একটি মহান উদ্দেশ্যে। আর তা হলো, মানুষ কেবল এক আল্লাহর ইবাদত করবে এবং গাইরুল্লাহর ইবাদত বর্জন করবে। আর আল্লাহর ইবাদত করতে এবং গাইরুল্লাহর ইবাদত বর্জন করতে হলে বান্দাকে জানতে হবে যে, কোনটি আল্লাহর আর কোনটি গাইরুল্লাহর ইবাদত। পাশাপাশি দুনিয়ার জীবনে মানুষের জন্য হক ও বাতিল, হেদায়েত ও গোমরাহির মাঝে পার্থক্য করে হককে গ্রহণ ও হেদায়েতের ওপর অটল-অবিচল থাকা অত্যন্ত জরুরি ও আবশ্যকীয়। আর এ আবশ্যকীয়তা ও প্রয়োজন পুরা করার জন্য প্রত্যেকের যথেষ্ট পরিমাণ দীনের ইলম বা জ্ঞান থাকা দরকার। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, মানব জীবনে ইলমে দীনের গুরুত্ব কত সীমাহীন। ইলমের এ গুরুত্বাধিক্যের কারণে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এ ইলম অর্জনের প্রতি জোর তাকিদ দিয়েছেন। ইরশাদ করেছেন, ‘আর মুমিনদের সবার জন্য একসঙ্গে বেরিয়ে পড়া যেহেতু সম্ভব নয়, তাই প্রত্যেক বড় দল থেকে একটি উপদল কেন বের হয় না, যাতে তারা ইলমে দীন শিক্ষা করবে এবং (শিক্ষা সমাপ্ত করে) ফিরে এসে তারা তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করবে, যাতে তারা বিরত থাকে।’ সুরা তওবা : ১২২। কোরআনের পাশাপাশি অসংখ্য হাদিসের মাঝে ইলমের গুরুত্বের কথা বিবৃত হয়েছে। ইলম অর্জনের সীমাহীন গুরুত্বের কারণে মহানবী (সা.) তাঁর সব উম্মতের ওপর ইলম অর্জন বাধ্যতামূলক ও আবশ্যক করে দিয়ে ইরশাদ করেছেন, ‘ইলমে দীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর ফরজ।’ বুখারি। অন্য এক হাদিসে ইলম অর্জনের নির্দেশ দিয়ে রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ইলমে ফরায়েজ ও কোরআন শিক্ষা কর। কেননা আমাকে উঠিয়ে নেওয়া হবে।’ তিরমিজি। ইলমের গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গে ইলমের ফজিলতও সীমাহীন। ইলম অর্জনকারী একজন আলেমের মর্যাদা ও ফজিলত সম্পর্কে  মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি বলে দিন তোমাদের মধ্যে যারা জানে (অর্থাৎ আলেম) আর যারা জানে না তারা উভয়ে কি এক সমান হতে পারে?’ সুরা জুমার : ৭। এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইলমসম্পন্ন আলেম এবং ইলমহীন মূর্খ এ দুই প্রকার লোকের মাঝে পার্থক্যের প্রতি মুসলমানদের সচেতন করে তুলেছেন এবং ইলমওয়ালা আলেমের মর্যাদার কথা উল্লেখ করেছেন। অন্য আরেক আয়াতে আল্লাহতায়ালা আরও স্পষ্টভাবে আলেমদের মর্যাদার কথা তুলে ধরে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ইমান এনেছে এবং যাদের ইলম দেওয়া হয়েছে, আল্লাহ তাদের উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন।’ সুরা মুজাদালা : ১১।  আল্লাহতায়ালা অন্যত্র আরও ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ যাকে চান হিকমত দান করেন। আর যাকে হিকমত দান করা হয়েছে, তাকে প্রভূত কল্যাণ দেওয়া হয়েছে।’ সুরা বাকারা : ২৬৯।

লেখক : খতিব, তিলনাচক, নওগাঁ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর