মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

খলজির দুর্বলতা

অভিযোগ করা হয় যে, আলাউদ্দীন খলজির সরকারের কোনো মজবুত বুনিয়াদ ছিল না এবং তার শাসনের অন্তর্নিহিত দুর্বলতার জন্য খলজি বংশের অপসারণ সহজ হয়েছিল। তার শাসনব্যবস্থা স্বেচ্ছাচার ও সামরিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল ছিল। তার মূল্যনিয়ন্ত্রণ প্রথা দরিদ্র শ্রেণির কল্যাণ সাধন করেছিল; কিন্তু ধনী, ব্যবসায়ী ও মালিকশ্রেণি তার সমর্থক ছিল না, কারণ এটি তাদের অধিক সম্পদ ও আয় হতে বঞ্চিত করেছিল। গোয়েন্দা প্রথা ও কঠোর শাস্তির বিধান জনসাধারণের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। তার নির্যাতনমূলক ব্যবস্থা জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল। সবাই সুযোগের প্রতীক্ষায় ছিল। কিন্তু সুলতান অত্যন্ত সাহসিকতা ও তেজস্বিতার সঙ্গে সব প্রতিভূলতাকে তার নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। ক্রমে তার বয়স বেড়ে যাচ্ছিল। ফলে তার তেজস্বিতা ও দৃঢ়তা হ্রাস পেয়েছিল। তিনি স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিলেন। বিদ্রোহীরা এবার সুযোগ হলে তৎপর হয়ে উঠে। মালিক কাফুরও সিংহাসন দখলের ষড়যন্ত্র করেন। এ অবস্থায় সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ দেখা দেয়। এ বিদ্রোহ দমনের শক্তি ও সাহস তখন আর সুলতানের ছিল না। কিন্তু তবু এতে সুলতানের কৃতিত্ব ম্লান হয়নি। একটি ক্ষুদ্র রাজ্যকে তিনি এক বিশাল সম্রাজ্যে রূপান্তরিত করেন এবং দিল্লি সালতানাতের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দক্ষিণ-ভারতকে তার আধিপত্যে আনয়ন করেন। যে মোঙ্গলরা দিল্লি সালতানাতের অস্তিত্বের ওপর হুমকি দিচ্ছিল, আলাউদ্দীন খলজি তাদের ওপরও মরণাঘাত হানেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর