বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আবার কি কুত্তা তল্লাশির যুগ

নঈম নিজাম

আবার কি কুত্তা তল্লাশির যুগ

ফ্রান্স এক সময় ছিল রাজা শাসিত। রাজারা তাদের স্বৈরশাসনের সঙ্গে যুক্ত করতেন যাজক ও উচ্চবিত্তদের। এতে শাসনে সুবিধা হতো। ফরাসি বিপ্লবে রাজতন্ত্র তছনছ হয়ে যায়। ১৭৮৯ সালে রাজা লুইয়ের শাসনামলের অবসান হয়। এ অবসানের ১০ বছর পর ১৭৯৯ সালে অবসান হয় ফরাসি বিপ্লবের। যাজকদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল ১৭৮৯ সালেই। কারণ অভিজাত সম্প্রদায় ও যাজকরা ছিলেন রাজার ব্লু– আই। ফরাসি সমাজে তাদের বিশাল ক্ষমতার বাহার ছিল।  রাজা লুইয়ের ক্ষমতাচ্যুতি তাদের আতঙ্কগ্রস্ত করে। এরপর তারাও বিদায় হন।  আর তাদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে নিপীড়নমূলক কর প্রথা ও সামন্ততন্ত্র বাতিল হয়। ফরাসি বিপ্লবের মূল কারণ ছিল রাজাদের যুদ্ধনীতি এবং বিলাসিতা, সমাজে বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা বাড়ানো। এ কারণে আর্থিক সংকটও দেখা দেয়। সাধারণ মানুষের মাঝে ভিতরে ভিতরে ক্ষোভ তৈরি হয়। ফ্রান্সে তখন ৯৫ ভাগ সম্পদের মালিক ছিল পাঁচ ভাগ মানুষ। তারা আবার আয়কর দিতেন না। অথচ যারা আয়কর দিতেন তারা ছিলেন সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত। এ বঞ্চিত মানুষেরা কথা বলতে পারতেন না। আর কেউ ক্ষোভ পুষতে না পেরে কথা বললেই বাস্তিল দুর্গে নিয়ে যাওয়া হতো। চালানো হতো বর্বর নির্যাতন। এ সময়ে আর্থিক সমস্যা মোকাবিলায় কর বাড়ানোর প্রস্তাব দেন রাজা লুই। অর্থসচিব নেকার দ্বিমত পোষণ করলেন। বললেন, স্টেট জেনারেলের বৈঠক ডাকতে হবে কর বাড়াতে। ১৭৫ বছর ধরে স্টেট জেনারেলদের বৈঠক হয় না। রাজা বৈঠক ডাকলেন। সুযোগ বুঝে আমজনতার নেতারা দাবি তুললেন, অভিজাত সম্প্রদায় এবং তাদের আসন বা সদস্য সংখ্যা সমান হতে হবে। রাজা এ দাবিও মানলেন। নির্বাচনে জেগে উঠল সাধারণ জনতা। আমজনতার প্রতিনিধিত্বকারী নেতারাই বেশি আসন পান। কিন্তু উচ্চবিত্তরা তাদের মেনে নিতে নারাজ। তাই তাদের ছাড়াই অধিবেশন শুরু হয়। সভাকক্ষে ঢুকতে না পেরে আমজনতার প্রতিনিধিরা নিজেদের অপমানিতবোধ করেন। বাড়তে থাকে প্রতিবাদ। ফ্রান্সে তৈরি হয় অচলাবস্থা। এ সংকট নিরসনে উভয় সম্প্রদায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সিদ্ধান্ত হয় ফ্রান্সের জন্য একটি সংবিধান রচনা হবে। সংবিধানের ভিত্তিতে চলবে ফ্রান্স। তার আগ পর্যন্ত কেউ ঝামেলা করবেন না।

এর মাঝে রাজা ঘোষণা দেন সাধারণ মানুষের দাবি মানা যাবে না। তারা যেন রাজপথ থেকে সরে পড়ে। এতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। সাধারণ মানুষ ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হয়। হাজার হাজার মানুষ প্যারিসে সমবেত হয়। তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সাধারণ মানুষের ঢেউ আঘাত হানে বাস্তিল দুর্গে। বাস্তিলের রক্ষীরাও কামানের গোলা ছুড়ে মারে। মারা যায় দুই শতাধিক মানুষ। এতে জনগণ আরও ক্ষুব্ধ হয়। পতন হয় বাস্তিল দুর্গের। রাজা লুই বন্দী হন। ১৭৯৩ সালের ২১ জানুয়ারি রাজা লুইকে প্রকাশ্য গিলোটিনে শির-েদ করা হয়। তার মৃত্যুদণ্ড আয়োজকদের মধ্যে ৩৬১ জন এভাবে হত্যার পক্ষে, ২৮৮ জন বিপক্ষে রায় দেন। এর ১০ দিন পর রানীকে একইভাবে শির-েদ করা হয়। শুনতে সবকিছু নিষ্ঠুর মনে হলেও এভাবেই ফ্রান্স নতুন যাত্রা শুরু করে। তারপর থেকে ফ্রান্স নানামুখী সমস্যার মাঝেও এগিয়ে চলেছে। বিশ্বের অনেক দেশ দখল করেছে, শাসন করেছে। অংশ নিয়েছে বিশ্বযুদ্ধে। এখন চেষ্টা করছে নিজেদের গণতান্ত্রিক, মানবাধিকার ও ওয়েলফেয়ার স্টেট হিসেবে চালাতে। যদিও মাঝে মাঝে তাদের কিছু নীতির সমালোচনা হয় বিশ্বজুড়ে। তারপরও ফ্রান্স তার মতো করে চলছে। ছবি ও কবিতার এ দেশ শিল্প ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে নিজের মতো করে। ফ্যাশন, খাবার নিয়েও তাদের রয়েছে শৈল্পিক দৃষ্টি।

ইতিহাস ঐতিহ্যের সেই ফরাসি আবার কাঁদছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হামলা হয়েছে। নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে একদল নৃশংস খুনি। যারা ধর্মের নামে ধ্বংস করছে মানবতাকে। একদল ভয়ঙ্কর মানুষরূপী জংলি প্যারিসে হামলা করে পুরো বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে সভ্য জগতের মানুষদের। উদ্বিগ্ন করেছে পশ্চিমাদের। কিন্তু কেন এ হামলা? এ চিন্তা আমাদের মাঝেও ঘুরপাক খাচ্ছে। কিছু দিন আগে টনি ব্লেয়ার বলেছিলেন, ইরাক আক্রমণ তাদের ভুল ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীরাও বিতর্কে জড়িয়েছেন। তারা একজন আরেকজনের ভুল ধরিয়ে দিচ্ছেন। সমালোচনা করছেন। বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য নীতি ভুল ছিল। সাদ্দামকে উচ্ছেদ করা ঠিক হয়নি। বোঝাই যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেবে নতুন করে। এর মাঝে জঙ্গিবাদ নিয়ে বসতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও আমেরিকা। আমরা এশীয়রাও একটা স্থায়ী সমাধান চাই। এভাবে চলতে পারে না। মানবতার বিরুদ্ধে লড়াইকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে অনেক আগেই আসা দরকার ছিল। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে। ধর্মের নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সংঘাত ও সহিংসতার বিরুদ্ধে। আমরা শান্তি চাই। মানবতার কল্যাণে এক নতুন বিশ্ব দেখতে চাই। সন্ত্রাস, যুদ্ধ ও জঙ্গিবাদমুক্ত হতে হবে সব কিছু। পশ্চিমাদেরও সতর্ক হতে হবে। তাদের বের হয়ে আসতে হবে অতীতের ভুল নীতি থেকে। তেল, অস্ত্র ও ধর্মের বৈষম্যমূলক বাণিজ্য থেকে। কারণ প্রমাণ হয়েছে- আফগান, ইরাক, মিসর নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। লিবিয়া নিয়ে তারা ভালো কাজ করেনি। সাদ্দাম, গাদ্দাফিরা তাদের দেশে স্বৈরাচার ছিলেন। কিন্তু তাদের উৎখাত করে সেসব দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়নি। পশ্চিমারা আল কায়েদা আর ইসলামিক স্টেটের জন্ম দিয়েছে। ধর্মের নামে জঙ্গি তৈরি করেছে। আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েতকে উচ্ছেদ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বাপ্নিক প্রকল্প। সেই প্রকল্প তারা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আল কায়েদা নামের দানব প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানব প্রথম আঘাত যুক্তরাষ্ট্রেই হেনেছিল। একটি ভুল আরেকটি ভুলের জন্ম দেয়। পশ্চিমাদের ভুলের খেসারত আজ বিশ্বকে গুনতে হচ্ছে। সাদ্দাম হোসেনের সময় ইরাকে একটা স্থিতি ছিল। স্বাভাবিকতা ছিল। ঘরে ঘরে টেলিভিশন ছিল, রেফ্রিজারেটর ছিল। এখন ঘরে ঘরে বোমা-বারুদ। ধর্মের নামে তখন মসজিদে বোমাবাজি হতো না। সাদ্দামের হুমকি-ধমকিতে মধ্যপ্রাচ্য কেঁপে উঠত। ভুল ছিল তার কুয়েত আক্রমণ। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। সেই সাদ্দামকে অন্যভাবে শায়েস্তা করা যেত। কিন্তু তাকে নিয়ে যা করা হলো পুরোটাই ভুল। সাদ্দামকে উচ্ছেদের পর ভয়ঙ্কর কোনো অস্ত্র ইরাকে পাওয়া যায়নি।

 

গাদ্দাফি ছিলেন আরেক স্বৈরাচার। তার ধাঁচে গণতন্ত্র ছিল না। কিন্তু আমরা তাকে দেখেছি নারী দেহরক্ষী নিয়ে চলতে। তার চলন-বলনের স্টাইল ছিল আলাদা। সাদ্দামের মতো গাদ্দাফিও জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন না। তার অপরাধ ছিল তিনি ছিলেন স্বৈরাচারের জনক ও বিশ্বের অনেক দাগি খুনির পৃষ্ঠপোষক। বাংলাদেশের ফারুক-রশিদকে তিনি এক সময় আশ্রয় দিয়েছিলেন। জাসদের গণবাহিনীর একটি দলকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন গাদ্দাফি। তাকেও অন্যভাবে শায়েস্তা করার দরকার ছিল। কিন্তু পশ্চিমারা তা করেনি। বরং তাকে আশ্রয়-প্রশয় দিয়েছিল। হঠাৎ তাকে উচ্ছেদ তরে সেই দেশটিকে আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে দেওয়া হয়েছে। লিবিয়া এখন জঙ্গি, সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি।

বাংলাদেশের আমাদের মানুষগুলো সেদেশে ভালো নেই। বেশির ভাগই ফিরে এসেছেন। শুধু লিবিয়া নয়, সিরিয়া নিয়েও পশ্চিমারা সঠিক পথে নেই। একদল আসাদের পক্ষে, আরেক দল বিপক্ষে। মাঝখান থেকে আশকারা পাচ্ছে আইএস। আগে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পশ্চিমাদের এক নীতিতে আসতে হবে। এখানে তেল আর অস্ত্রের বাণিজ্য নীতি যোগ করলে চলবে না। ইসলামের বিরুদ্ধে ভিতরগত বিদ্বেষ পোষণ করলে চলবে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এ শান্তির পথে মুসলমানদের ধরে রাখতে হবে। তাদের এক গ্রুপকে আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে উসকে দিলে চলবে না। মানবতাকে সামনে রাখতে হবে। মানবিক মূল্যবোধগুলোকে জাগ্রত করতে হবে। নারী ও শিশুদের নিরাপদ রাখতে হবে যুদ্ধ থেকে। যুদ্ধ নয়, সন্ত্রাস নয়, শান্তি চাই আমরা নিরীহ বিশ্ববাসী।

যুদ্ধ ও জঙ্গিবাদী তৎপরতায় হয়রানিতে পড়ে নিরীহ মানুষ। আমার নিজের একটা অভিজ্ঞতা বলছি। সময়টা নাইন-ইলেভেনের পরের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাঝে মাঝে যেতাম। এখনো যাই। প্রথমবার তেমন সমস্যায় পড়িনি। কিন্তু দ্বিতীয়বারের চিত্র ভিন্ন। জে এফকে বিমানবন্দরে অহেতুক আমাকে বসিয়ে রাখা হলো আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভাবলাম প্রবেশ করতে দেবে না। কিন্তু মন খারাপ করেই তারা আমাকে অনুমতি দিলেন। ফেরার সময় চূড়ান্ত তল্লাশিতে ছিল ডগ স্কোয়াড। আমার এক বন্ধু তখন মজা করে বলেছিলেন, কুত্তা তল্লাশি। আরেকবার আমি ছিলাম স্টেট ডিপার্টমেন্টের অতিথি। শিকাগো বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের লাইন থেকে নাম ধরে ডেকে আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা। আমি মহাখুশি। কিন্তু আন্ডার রেস্ট্রিকশন থাকার কারণে ফরম পূরণ করেই প্রবেশ করতে হলো। বাড়তি হলো ফরম পূরণে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা সম্মানের সঙ্গে সাহায্য করলেন। তাতেও লাগল এক ঘণ্টার কাছাকাছি। গত কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে প্রবেশে ঝামেলায় পড়িনি। এখন খুব একটা প্রশ্ন করে না। মুখে হাসি দিয়ে ইমিগ্রেশন কর্তা সিল মেরে দেন। মন মেজাজ খারাপ থাকলে প্রশ্ন করেন কেন আসলাম, কতদিন থাকব। এতে দুই চার মিনিট লাগে। এর বেশি না। কিন্তু এবারকার ফ্রান্সের ঘটনা আমাকে ভয় লাগিয়ে দিয়েছে। উদ্বিগ্ন করে তুলছে। আবার নাইন-ইলেভেনের নিরাপত্তার যুগ শুরু হয় কিনা। অথবা তার চেয়ে খারাপ কিছু। এখন নিরাপত্তা তল্লাশিতে কোমরের বেল্ট আর জুতা খুলতে হয়। প্রবেশ করতে হয় সারা শরীর স্ক্যান করার মেশিন দিয়ে। শুনি এ মেশিন দিয়ে হাঁটলেই নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সারা শরীর দেখতে পান। এখন হয়তো আরও কঠোর নিরাপত্তা নেমে আসতে পারে। আরও হয়রানি আসতে পারে আমাদের জন্য, মুসলমানদের জন্য। কিছু সন্ত্রাসী, জঙ্গির কারণে বিশ্বজুড়ে আমাদের নাগরিকদের সমস্যা পোহাতে হবে। এ সন্ত্রাসীরা দুনিয়াজুড়ে ছড়াচ্ছে অশান্তির আগুন। শান্তিপ্রিয় মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।

সেদিন একজন বললেন বাংলাদেশের কী হবে? বাংলাদেশ কি নিরাপদ? আজকাল এ নিয়ে কথা বলতে মন চায় না। তবুও বললাম, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে পবন দাস বাউলের গান শুনতে গিয়েছিলাম আর্মি স্টেডিয়ামে। ৬০ হাজার মানুষ মনোযোগ দিয়ে গান শুনছে মধ্যরাত অবধি। আমি রাত ১টায় ফিরে আসি। তখনো দর্শকের কমতি ছিল না। তারা চীনাদের নাচের অনুষ্ঠান উপভোগ করেছে রাত আড়াইটা অবধি। উচ্ছ্বাসের জোয়ার ছিল শেষ পর্যন্ত। যে দেশে মধ্যরাত অবধি মানুষ গান শোনে, পরদিন আবার ফজরের নামাজ দিয়ে জীবন শুরু করে সেদেশে জঙ্গিবাদ ঠাঁই নিতে পারে না। আমাদের দেশের মুসলমানরা ধর্মভীরু। তারা অন্যায়কে মেনে নেয় না। তারা জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। আর দেয় না বলেই আমরা শান্তিতে আছি। বিচ্ছিন্ন যে ঘটনাগুলো ঘটেছিল তাতে রাজনীতি ছিল। ধর্মপ্রাণ মানুষদের সম্পৃক্ততা ছিল না। জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী রাজনীতিবিদরা সমস্যা তৈরি করেন। সাধারণ মানুষ তাতে জড়ান না। আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম ও পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলি না। ফ্রান্সের মতো আধুনিক রাষ্ট্র যখন কে হিজাব পরবে আর কে পরবে না এ সিদ্ধান্ত দেয় তখন আমরা ব্যথিত হই। হতাশ হই। কারণ এখানেও নাগরিকদের তার স্বাধীনভাবে চলতে দেওয়া দরকার। ন্যুড ড্যান্স ফ্রান্সে নিষিদ্ধ নয়। খোলামেলা পোশাক পরে চলাচলও নিষিদ্ধ নয়।  তবে হিজাব নিষিদ্ধ হবে কেন? বাংলাদেশ ফ্রান্স নয়। আমাদের নিজস্ব রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা সেই সহনশীলতা নিয়ে চলতে চাই।  আমরা আশা করব প্যারিসের বর্বর হামলার মধ্য দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব নতুন করে ভাববে সবকিছু।

            লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সর্বশেষ খবর