বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাকিস্তান দায় এড়াতে পারে না

নির্লজ্জতারও সীমা থাকা উচিত

নির্লজ্জতারও একটি সীমা থাকা উচিত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, পাকিস্তান সে সীমা অতিক্রম করেছে। তারা ইসলামাবাদে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে ২৩ নভেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে দেওয়া বাংলাদেশের নোটভারবালের বক্তব্যকে অসার ও বাস্তবতাবর্জিত বলে উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। পাশাপাশি একাত্তরের নৃশংস গণহত্যা বা অপরাধের সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়ানোর অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছে। এর কিছুই সত্য নয় বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির ঘটনায় পাকিস্তান সরকারের অনভিপ্রেত প্রতিক্রিয়ার প্রতিবাদে। পাকিস্তান সরকারের প্রতিক্রিয়ায় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করা হয়েছিল অনভিপ্রেতভাবে। শুধু তাই নয়, ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে না বলে সম্মত হয়েছিল এমন অবাঞ্ছিত মন্তব্যও করা হয়। ১৯৭৪ সালের ত্রিদেশীয় চুক্তির বদৌলতে বাংলাদেশ আটক ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সামরিক কর্মকর্তার বিচার থেকে সরে দাঁড়ায়। সে সময় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তারা অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিচার করবে। পাকিস্তানের বিচারপতি হামদুর রহমান কমিশনও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করে তাদের বিচারের জন্য সুপারিশ করে। পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারাও তাদের লিখিত বিভিন্ন বইয়ে যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি স্বীকার করেছে। পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে সে সময়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে শত শত রিপোর্টও প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতায় ছিল অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা সামরিক সরকার। পাকিস্তানে বর্তমানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও তারা কেন একাত্তরের দায় অস্বীকার করে সে অপরাধের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।  আমরা পাকিস্তানি ধৃষ্টতার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং আশা করতে চাই এ বিষয়ে সরকার অবশ্যই দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে। পাকিস্তানকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বানও জানানো হবে সরকারের পক্ষ থেকে।

সর্বশেষ খবর