বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

এগিয়ে যাও বাংলাদেশ

জাতিসংঘের দৃষ্টিতেও উন্নয়নের রোল মডেল

কতটা এগিয়েছে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল একটি সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ প্রতিষ্ঠার। স্বাধীনতার পর ইতিমধ্যে ৪৪টি বছর কেটে গেছে। আর মাত্র পাঁচ বছর পর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপিত হবে। ৪৪ বছর একটি জাতির জন্য কম সময় নয়। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্যও এটি যথেষ্ট সময়। সে নিরিখে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিচারে বাংলাদেশ যে এখনো পিছিয়ে তাতে সন্দেহ নেই। তারপরও ফেলে আসা ৪৪ বছরে এদেশের ১৬ কোটি মানুষের অর্জন বহু ক্ষেত্রেই সমীহ করার মতো। স্বাধীনতার সময় দেশের সিংহভাগ মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে বাধ্য হতো। দারিদ্র্য তাদের এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের দাস বানিয়েছিল। এমনকি মাত্র দেড় দশক আগেও দেশের ৩৩ শতাংশ মানুষ ছিল সে অভ্যাসে অভ্যস্ত। যা কমতে কমতে এখন এক শতাংশে দাঁড়িয়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই বাংলাদেশ প্রবেশ করবে সেসব দেশের তালিকায়, যেসব দেশের সবাই ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। শুধু স্যানিটেশন নয়— খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বহুক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। গত দেড় দশকে বাংলাদেশ যে দ্রুত হারে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। খোদ জাতিসংঘই সদস্য দেশগুলোকে লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলছে। ৪৪ বছরে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণের কিছু বেশি বাড়লেও খাদ্য উত্পাদন বেড়েছে তিনগুণ। বাংলাদেশ এখন ধান উত্পাদনে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। মাছ উত্পাদনেও শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে। যে দেশের মানুষ ১৯৯০ সালের আগে বিদেশি পুরনো পোশাকের ওপর নির্ভরশীল ছিল সেই বাংলাদেশ এখন চীনের পর সবচেয়ে বড় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ তার সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বিশাল রিজার্ভ প্রমাণ করছে বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। ৪৪ বছরে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া দুনিয়ার অনেক দেশের জন্য ঈর্ষণীয় হলেও এতে আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নসাধ একটি সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য পূরণে আরও দ্রুত এগোতে হবে। সেটিই সবার লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর