শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

একজন পদক পেলেও সেটা আমারই পাওয়ার কথা

মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূইয়া এমপি

একজন পদক পেলেও সেটা আমারই পাওয়ার কথা

দশ স্বাধীন হয়েছে ৪৪ বছর। প্রতি বছরই ঘুরে-ফিরে স্বাধীনতা দিবস এবং বিজয় দিবস আসে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রতিবারই বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে আমাকে যেতে হয়। রাজনীতিতে আসার পর এর গুরুত্ব আরও বেড়েছে। প্রায় প্রতিবারই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় আমাকে। তখন এক ধরনের বিব্রতকর অবস্থায় পড়ি। প্রশ্নটি হলো— আপনি কেন পদক পাননি? কেউ কেউ প্রশ্ন রাখেন এত বড় যুদ্ধ করলেন পদক পাননি কেন ইত্যাদি ইত্যাদি। বিব্রত হওয়ার আরও একটি কারণ রয়েছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দাওয়াত কার্ডে এখনো কেউ কেউ আমার নামের শেষে বিবি (বীরবিক্রম) কেউবা বিপি (বীরপ্রতীক) লিখে থাকেন।

অনেকেরই জানার কথা মুক্তিযুদ্ধের পরপরই বীরদের অবদান মূল্যায়নের স্বীকৃতি স্বরূপ ৬৭৬ জনকে ‘পদক’ দেওয়া হয়। ১৯৭২ সালে ১৫ ডিসেম্বর সরকার কর্তৃক এই খেতাব দেওয়া হয়েছিল। খেতাবগুলো হলো বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরবিক্রম ও বীরপ্রতীক। বীরত্বের শ্রেষ্ঠ উপাধি অর্জনকারীরা হলেন বীরশ্রেষ্ঠ। সম্মুখসমরে দেশ ও জাতির জন্য প্রাণ দিয়েছেন এমন বীরত্বপূর্ণ সাত বীরযোদ্ধাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বীরশ্রেষ্ঠ পদক। এই বীর সন্তানরা হলেন ১. ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ২. নায়েক মুন্সী আবদুর রউফ ৩. ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ৪. সিপাহি হামিদুর রহমান ৫. ফ্লাইট  লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ৬. ল্যান্স নায়েক মোহাম্মদ মোস্তফা ও ৭. ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ রুহুল আমিন। বীরউত্তম উপাধি পেয়েছেন ৬৮ জন, বীরবিক্রম উপাধি পেয়েছেন ১৭৫ জন, বীরপ্রতীক উপাধি পেয়েছেন ৪২৬ জন।

পাঠক, লেখার শিরোনাম দেখে হয়তো বুঝতে অসুবিধার কথা নয়, লেখায় এক ধরনের ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টির ইতিবৃত্ত তুলে ধরা হবে। যখন পদক দেওয়া হয়, তখন আমি যশোর সেনানিবাসে মেজর পদে ১২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড। এটি ছিল ৫৫ ব্রিগেডের অধীনে। যার কমান্ডার ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ মঞ্জুর। পদক দেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সেনানিবাসে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি দেখা দেয়। আমার জানা মতে, বহু অফিসার সেদিন এ বিষয়ে রিপ্রেজেনটেশন দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে আমিও একজন। পদক না পাওয়ার বিষয়টি আমাকে সে সময় খুবই ব্যথিত করে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠাই। চিঠিটির একটি বাক্য ছিল এ রকম—  My contribution in the war of liberation was of no mean consequences in compared to those who are given gallantry awards.

কিন্তু, আমরা কেউ সেদিন কোনো সুবিচার পাইনি। পাঠক, আমি ব্যক্তিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দিকের প্রথম কয়েকজনের একজন। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার তরুণ বা যুবক তারা হয়তো স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম দিকে কালুরঘাটের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা ঘোষণা শুনেছেন— ‘যার যার অস্ত্র নিয়ে লালদীঘির ময়দানে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়ার কাছে রিপোর্ট করুন। বাস্তবতা হচ্ছে, আমিই সেই ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে সম্মুখসমরে লড়াই করেছিলাম। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম লড়াই ‘কুমিরার লড়াই’টি আমার নেতৃত্বেই হয়েছিল। তারপর তেলিয়াপাড়া, সাজিবাজার, মনতলা, শায়েস্তাগঞ্জ, বিজয়নগর, মুকুন্দপুর, ধর্মগড়, সর্বশেষ আশুগঞ্জে সরাসরি পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াই আমার নেতৃত্বেই হয়।

পাঠক, আমি ২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে কুমিরার লড়াই সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরছি। মুক্তিযুদ্ধের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় ‘কুমিরার যুদ্ধ’। মুক্তিযুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট খ্যাত এ যুদ্ধটি হয়েছিল ২৬ মার্চ সন্ধ্যায়। ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জিয়াউর রহমানের আলোচিত ঘোষণাটিরও একদিন আগে। ব্যাপক আলোচিত এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। সেদিন একটি মাত্র হেভি মেশিনগান ও কয়েকটি লাইট মেশিনগান এবং কয়েকটি রাইফেল নিয়ে পাকবাহিনীর একটি শক্তিশালী ব্যাটালিয়নের মুখোমুখি হয়েছিলাম আমরা ১০২ জন যোদ্ধা। কুমিরার যুদ্ধে শত্রুপক্ষের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা এই যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখলে সহজেই অনুমান করা যায়। সেই যুদ্ধে শত্রুপক্ষের কমান্ডিং অফিসার শাহপুর খান বখতিয়ার, একজন লেফটেন্যান্টসহ ১৫২ জন পাকসেনা নিহত হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কুমিরার লড়াইটা ছিল প্রথম মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তানি মেজর (পরে ব্রিগেডিয়ার এবং বিমান দুর্ঘটনায় নিহত) সিদ্দিক সালিকের ‘উইথনেস টু সারেন্ডার’ বইয়ে কুমিরার যুদ্ধ সম্পর্কে লেখা হয়েছে— ‘ কুমিরার যুদ্ধ ছিল পাকিস্তানের জন্য মহাবিপর্যয়।’ উল্টো করে ভাবলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য ছিল একটি টার্নিং পয়েন্ট। যুদ্ধের শুরুতেই চরমভাবে হোঁচট খাওয়া। পাঠকদের অবগতির জন্য বলছি, মেজর সালিক ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই অঞ্চলে আইএসপিআরে দায়িত্বে ছিলেন। শুধু তাই নয়, কুমিরার লড়াইয়ের এক মাস পর একদিন ভারতীয় সীমান্তে ক্যাপ্টেন (পরে  লে. কর্নেল ও মন্ত্রী) জাফর ইমামের কাছে জানলাম ওই দিন আমাদের প্রতিপক্ষ ছিল ২৪ এফএফ রেজিমেন্ট। জাফর ইমাম ওই রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন ওই যুদ্ধে পুরো কোম্পানিই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। আজকাল কুমিরার এ যুদ্ধটি মিলিটারি ইনস্টিটিউশনগুলোতে পড়ানো হয়। এমনকি ঢাকা সেনানিবাসের জাদুঘরে (বিজয় কেতনে) আমার ছবিসহ কুমিরার যুদ্ধের বিবরণ সুন্দরভাবে দেয়ালে সুরক্ষিত আছে। জাদুঘরটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত।

পাঠক, কুমিরার যে লড়াই দিয়ে যে যুদ্ধ শুরু করেছিলাম তার শেষ করেছি আশুগঞ্জের লড়াই দিয়ে। এ সময়ের মধ্যে বেশ ক’বার মরতে মরতে বেঁচে গেছি। কত দিন না খেয়ে, কত রাত না ঘুমিয়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে, সাপ, জোঁক, পোকামাকড়, কাদামাটি মাড়িয়ে শত্রুপক্ষের আস্তানায় হানা দিয়েছি। যা ভাবলে এখনো গা শিউরে ওঠে। পাঠকদের অবগতির জন্য আমি আরও কটি বিষয় উল্লেখ করছি। মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের স্মৃতি নিয়ে ১৯৭২ সালের জুন মাসে ‘মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস’ শিরোনামে একটি বই লিখেছিলাম। এটি মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা প্রথম বই। সে বইয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, কুমিরার যুদ্ধ, তেলিয়াপাড়া, আশুগঞ্জসহ বিভিন্ন অপারেশনে আমার যুদ্ধের কথা উঠে এসেছে।

পাঠক, এতক্ষণ এ আলোচনার উদ্দেশ্য হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সম্মুখ একটি সফল যুদ্ধ সম্পন্ন করার পরও আমি কেন পদক পাইনি। আসলে পদক আমাকে দেওয়া হয়নি। সেদিন পদক দেওয়ার ক্ষেত্রে আমার প্রতি বিরূপ আচরণ করা হয়েছিল। আমার বীরত্বের স্বীকৃতির প্রতি অবিচার করা হয়েছিল। আসলে আমার পদক পাওয়ার জন্য কুমিরার যুদ্ধটিই যথেষ্ট ছিল। যেখানে বীরত্বের স্বীকৃতির জন্য ৬৭৬ জনকে পদক দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমি বঞ্চিত। আমি মনে করি, জীবিত অবস্থায় একজন পদক পেলেও সেটা আমারই পাওয়ার কথা। কারণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে এককভাবে কুমিরার যুদ্ধের মতো দ্বিতীয় উদাহরণ আর নেই। আসলে পদক দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারে গ্যালেন্টারি অ্যাকশনের চেয়ে স্বজনপ্রীতি, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ, পক্ষপাতিত্বই বেশি কাজ করেছিল। সেদিন পদক নিয়ে নানা ক্ষোভের কথা শুনেছি অনেকের মুখে। আবার পদক পেয়েছেন এমন অনেককে বলতে শুনেছি আমি তো ফ্রন্টেই ছিলাম না। তারপরও তারা পদক পেয়েছে। শুধু পদক না পেয়েই ক্ষুব্ধ ছিলেন না, পদক পেয়েও অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। আমার এক বন্ধু মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের তুলনায় পদকটা পেয়েছিলেন নিম্নমানের। তাই তিনি নামের শেষে পদকটা ব্যবহার করতেন না। তবে মহাখালীর নিউ ডিওএইচএস’র প্লট পেতে (পয়েন্টের কারণে) ১৯৭৮ সালে এ পদকটি তাকে সাহায্য করেছিল। যেহেতু আমি পদক পাইনি তাই আমাকে প্লটের জন্য ১৯৮২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আমি কয়েক বছর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কুমিরার লড়াই ও পদক নিয়ে বানরের পিঠা ভাগাভাগি’ শিরোনামে একটি আর্টিক্যাল লিখেছিলাম। সেখানে পদকের পদাবলি নিয়ে কিছু কথা উল্লেখ করেছি। প্রকৃত অর্থেই ওই সময় পদক নিয়ে বানরের পিঠা ভাগাভাগির মতোই ঘটনা ঘটেছিল। এ প্রসঙ্গে একটা ঘটনা এখানে উল্লেখ করতে চাই, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে আশুগঞ্জে যখন মিত্রবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছিল তখন আমার কোম্পানির একজন হাবিলদার পজিশন ছেড়ে দুই বগলে দুটি আর্টিলারি শেল নিয়ে আশুগঞ্জ থেকে পূর্বদিকে সোহাগপুরে নিরাপদ স্থানে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায়। তাকে খুঁজে বের করতে আমার তিন দিন সময় লেগেছিল। আমার এ উদাহরণ দেওয়ার উদ্দেশ্য সেও পদক পেয়েছে। আরেকজনের কথা মনে পড়ে। সে ছিল আমার রানার। কুমিরার যুদ্ধেও সে আমার সঙ্গে ছিল। সেও পদক পেয়েছে। কয়েক বছর আগেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পদক পরা অবস্থায় সে আমার সামনে এসে অস্বস্তিবোধ করত, বলত স্যার আপনার প্রতি সত্যিই অবিচার করা হয়েছে। আসলে গেলেন্টারি অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার কথা গেলেন্টারি অ্যাকশনের ওপর ভিত্তি করে কিন্তু এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে অনেকে ফ্রন্টেই যায়নি বা ছিলেন না তারাও পদক পেয়েছে, তাদের পদক দেওয়া হয়েছে।

অপ্রিয় হলেও এ সত্যটি বলব, আমাদের সেক্টর কমান্ডার সবাই ‘বীরউত্তম’ খেতাব পেয়েছেন। যেহেতু পদকের নাম ‘সাহসিকতা পদক’, তাই কোন সাহসিকতাপূর্ণ লড়াইয়ের জন্য তারা ‘বীরউত্তম’ পদক পেলেন তা সবার জানা উচিত। বীরউত্তম পদক পেয়েছেন কর্নেল আবু তাহের, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য মেজর জিয়া। এ ছাড়া অন্য কোনো সেক্টর কমান্ডারের রণাঙ্গনে তেমন সাহসিকতাপূর্ণ অপারেশনের কথা আমার জানা নেই। খালেদ মোশাররফ কপালে শেলের আঘাত পান, কর্নেল তাহের একটি পা হারান। এ দুই বীরউত্তমই সম্মুখ সমরে লড়েছেন, যার বর্ণনা বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকায় দেখেছি। অনেকেই জানেন, এমন কয়েকজন বীরউত্তম খেতাবধারী আছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের মাটিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কারও কারও বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে হয়নি। তারা যুদ্ধ করলেন কোথায়? আর বীরউত্তম খেতাবইবা পেলেন কেন, কীভাবে? সব সেক্টর কমান্ডার বীরউত্তম আর আমার নেতৃত্বে কুমিরা যুদ্ধের সাফল্যের পরও পদক বঞ্চিত! তারপরও বলব, ‘বীরউত্তম’ খেতাবধারীরা কে কোথায় কোন লড়াইয়ে সাহসিকতার জন্য এ পদক অর্জন করেছেন তা দেশবাসীকে, নতুন প্রজন্মকে জানানো হোক। দেশ ও জাতির তা জানার অধিকার আছে। পাঠক, আসলে পদক বা খেতাব পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আমি যুদ্ধ করিনি। কিংবা যারা পদক পেয়েছেন তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলাও আমার এ লেখার লক্ষ্য নয়। আমি শুরুতেই উল্লেখ করেছি বিব্রতকর পরিস্থিতির কথা। এ লেখার উদ্দেশ্য সেই অযাচিত প্রশ্ন যা নিয়ে আমাকে প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।

জানি না আমার সঙ্গে বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেওয়া বীর সেনারা আজ কে কোথায় আছেন। ক’জনই বা বেঁচে আছেন। যারা বেঁচে আছেন কীভাবে বেঁচে আছেন! চাকরি জীবনে দু-একজনের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হতো। কাউকে কাউকে ব্যক্তিগত সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। এখন আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয় না। তবে এখনো স্মৃতি হাতড়ে বেড়াই। ৪৪ বছর পরও ওই স্মৃতি চোখে জ্বল জ্বল করে। গভীরভাবে ভাবলে শিহরিত হই। মনে হয় সেই ২৬ বছরের যুবক আমি। এখনো যেন শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি।

লেখক :  সভাপতি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর