কুষ্টিয়ার সেই কুলাঙ্গার স্কুলশিক্ষক হেলালউদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। কুষ্টিয়া শহরতলির আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হেলালউদ্দিন প্রাইভেট পড়ানোর সময় তার বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে কৌশলে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে তা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন অনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। এক সময় ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে তার অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিওচিত্র। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে ২০১৩ সালের ৭ জুলাই কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করে। ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৭ ও ৮-এর পৃথক দুটি ধারায় কুলাঙ্গার ওই শিক্ষক এবং আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মাহমুদা বেগম তার রায়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। মামলার অন্য আসামিরা বেকসুর খালাস পান। বাবা-মায়ের পর শিক্ষকদের গুরুজন হিসেবে শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয় আমাদের সমাজে। অভিযুক্ত শিক্ষক হেলালউদ্দিন পিতৃতুল্য মর্যাদার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ছাত্রীদের যেভাবে অনৈতিক সম্পর্কে বাধ্য করেছে তা যে কোনো মূল্যায়নে গর্হিত অপরাধ। আদালতে তার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে এবং এ রায়কে দৃষ্টান্তমূলক বলে অভিহিত করা যায়। ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে অতি সম্প্রতি রাজধানীর এক স্কুলশিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আমরা আশা করব, দৃষ্টান্তমূলক দুটি রায় এ ধরনের অপরাধের রাশ টেনে ধরতে সাহায্য করবে। প্রাইভেট পড়ার সময় ছাত্রীদের কেউ কেউ অনৈতিক আচরণের শিকার হয় এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। স্কুল-কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকতার মহান পেশাকে কলঙ্কিত করছে কিছু নৈতিকতাবিবর্জিত মানুষ। শিক্ষকতা পেশার মর্যাদা রক্ষায় এসব নষ্ট মানুষের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমাজ রুখে দাঁড়াবে আমরা এমনটিও দেখতে চাই।