বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
বিচিত্রিতা

বিপজ্জনক পাখি ক্যাসোয়ারি

বিপজ্জনক পাখি ক্যাসোয়ারি

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বিচারে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক পাখিটির নাম ‘ক্যাসোয়ারি’। ক্যাসোয়ারির পরিবারের অন্তর্ভুক্ত বিশাল দেহী ক্যাসোয়ারির দেখা পাওয়া যায় নিউগিনি এবং তার নিকটবর্তী দ্বীপের বর্ষাঘন অঞ্চলে। এ ছাড়া উত্তর অস্ট্রেলিয়ার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলেও এদের দেখা মেলে। উচ্চতার নিরিখে অস্ট্রিচ এবং এমুর পরেই ক্যাসোয়ারির স্থান। এরা উড়তে পারে না। সাউদার্ন নর্দার্ন বা ডোয়ার্ক বা বামন— এ তিন প্রজাতির পাখিই বেশি দেখা যায়। মূলত গভীর অরণ্যের বাসিন্দা ক্যাসোয়ারি একাকী স্বভাবের এবং লাজুক প্রকৃতির। সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির বিজ্ঞানসম্মত নাম ঈধংঁত্রড়ঁং। প্রায় ছয় ফুট লম্বা এবং ষাট-সত্তর কেজি ওজনের এক একটি ক্যাসোয়ারির চেহারা দেখার মতো, মাথা থেকে ঘাড়ের দিকে নীল ও বেগুনি রঙের চামড়া বাদ দিলে এদের সারাটা শরীরই খরখরে ও  কুচকুচে কালো পালক দিয়ে ঢাকা থাকে। পায়ের উপরের অংশে নীলচে এবং সবুজাভ ধূসর রঙের। গলার দিকে লাল এবং ঘাড়ের পেছনে কমলা রঙের ছোপ থাকে। এদের মুখে অত্যন্ত ধারালো একজোড়া ঠোঁট এবং মাথার ওপর ছাই রঙের ঝুঁটি দেখা যায়। ঝুঁটিটি কেরাটিন জাতীয় প্রোটিন দিয়ে তৈরি এবং নরম ও ইলাস্টিক প্রকৃতির। ক্যাসোয়ারির তিন আঙ্গুলবিশিষ্ট পায়ের পাতায় প্রতিটি আঙ্গুল নখযুক্ত। তবে এর মধ্যে মাঝের আঙ্গুলের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ ইঞ্চি লম্বা অনেকটা ছুরির মতো দেখতে নখটি সবচেয়ে মারাত্মক। প্রচণ্ড জোরে ছুটে এসে প্রায় পাঁচ ফুট লাফিয়ে উঠে শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এ ধারালো নখের সাহায্যে এরা শিকারকে ফালা ফালা করে দেয়। ক্যাসোয়ারির এই খুনে স্বভাবই এদের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণীর তকমা দিয়েছে। এমনিতে লাজুক স্বভাবের হলেও যদি এদের উত্ত্যক্ত করা হয় তবে এরা সহজেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং আক্রমণ করে। মূলত মানুষ এবং গৃহপালিত পশুরাই ক্যাসোয়ারির আক্রমণের সম্মুখীন হয়। এ কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিউগিনির সামরিক ঘাঁটির সেনাদের ক্যাসোয়ারির নজর এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

     আফতাব চৌধুরী।

সর্বশেষ খবর