রবিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

নারীকে প্রাপ্য মর্যাদা দিয়েছে ইসলাম

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

ইসলাম-পূর্ব যুগের নারীরা সব ক্ষেত্রে মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত ছিল। পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ দুনিয়ার সর্বত্রই ছিল প্রায় অভিন্ন অবস্থা। আরবের অবস্থা ছিল আরও খারাপ। কন্যাসন্তানের জন্মগ্রহণকে অনেক সময় অপমানজনক বলে মনে করা হতো। কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়াও হতো অনেক ক্ষেত্রে। স্ত্রীদের স্বামীর ঘরে কোনো অধিকার দেওয়া হতো না। দাসীদের সঙ্গে তাদের তেমন পার্থক্য ছিল না। ইসলাম কন্যা রূপে এবং স্ত্রী রূপে নারীর মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে সে লোকই উত্তম যে তার স্ত্রীর দৃষ্টিতে উত্তম। (তিরমিজি)। নারী সত্তার সবচেয়ে গর্বিত পরিচয় হলো জননী হিসেবে। ইসলামে জননীর মর্যাদা সবার ওপরে। রসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে অবশ্য ভয় করে চলবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে যে, তোমরা তাদের আল্লাহর নামে গ্রহণ করেছ এবং এভাবেই তাদের হালাল মনে করেই তোমরা তাদের উপভোগ করেছ।’ (মুসলিম)

পবিত্র কোরআনে স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকার প্রসঙ্গে ইরশাদ করা হয়েছে, স্ত্রীদেরও তেমন অধিকার রয়েছে যেমন স্বামীদের রয়েছে তাদের ওপর এবং তা যথাযথভাবে আদায় করতে হবে (আল বাকারা : ২২৮)

জাহেলি যুগে স্বামী মারা গেলে তার স্ত্রীকেও পরিত্যক্ত সম্পদের মতো স্বামীর পুরুষ উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হতো। ইসলাম তা বন্ধ করেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে ইমানদার লোকেরা! তোমরা মেয়েদের অন্যায়-জবরদস্তি করে নিজেদের মিরাসের সম্পদ বানিয়ে নিও না, তা তোমাদের পক্ষে আদৌ হালাল হবে না।’ (আন-নিসা : ১৯)

হজরত ওমর (রা.) ইসলাম-পূর্ব জাহেলিয়াতের যুগের নারী অধিকারহীনতা সম্পর্কে বলেছেন, ‘আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, জাহেলিয়াতের যুগে আমরা স্ত্রীদের কিছুই মনে করতাম না, পরে যখন আল্লাহ তাদের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে অকাট্য বিধান নাজিল করলেন এবং তাদের মিরাস নির্দিষ্ট করে দিলেন, তখন আমাদের মনোভাব ও আচরণের আমূল পরিবর্তন সাধিত হলো।’ (মুসলিম)

স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছেন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। স্ত্রীদের অধিকারের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তুমি যখন আহার কর, তাকেও আহার করাও, তুমি যখন পরিধান কর, তাকেও পরিধান করাও, কখনো মুখমণ্ডলে প্রহার কর না, কখনো অশ্লীল ভাষায় গালি দিও না এবং ঘরের মধ্যে ছাড়া তার থেকে বিচ্ছিন্ন হইও না।’  (আবু দাউদ) আল্লাহ আমাদের সবাইকে নারীর মর্যাদা রক্ষার তওফিক দান করুন।

লেখক :  ইসলামী গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর