সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

রিজার্ভ থেকে ডলার চুরি ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

রিজার্ভ থেকে ডলার চুরি ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার খোয়া গেছে, অথবা বলা যায় চুরি হয়েছে। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৮০৮ কোটি টাকা। এটি একটি বড় ঘটনা এবং সঙ্গত কারণেই সর্বত্র হৈচৈ এবং তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। গভর্নর আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন, দুজন ডেপুটি গভর্নর বরখাস্ত হয়েছেন এবং পদচ্যুত করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের সচিব আসলামুল আলমকে। এগুলো সবই অস্বাভাবিক, অপ্রত্যাশিত ও আকস্মিক ঘটনা। তাই তোলপাড়ও অনেক বেশি এবং যার ফলে কয়েক দিন যাবৎ এ খবরটি হয়েছে আমাদের মিডিয়ার টপ চার্টের উপাদান। তবে উল্লিখিত অ্যামাউন্ট আমাদের অর্থনীতির ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করবে না এবং দেশকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটেও ফেলবে না। কিন্তু কথা এখানে নয়। অল্পের মধ্য দিয়ে আমরা এ যাত্রায় বেঁচে গেছি। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এ ঘটনার সঠিক তদন্ত, দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং নির্মোহ পর্যালোচনা হওয়া উচিত। দেশের বিরুদ্ধে একের পর এক যে ষড়যন্ত্র আমরা দেখছি তাতে এর পিছনে বড় কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা যেমন খতিয়ে দেখা দরকার, তেমনি গভীর অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে সার্বিক নিরাপত্তার দিকটাও পর্যালোচনায় আনা প্রয়োজন। আলোচিত ক্ষেত্রে নিরাপত্তার জিম্মাদারদের সততা, আনুগত্য, দক্ষতা, সতর্কতা ও দায়বদ্ধতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অতি সংবেদনশীল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যাদের ওপর অসীম বিশ্বাস স্থাপন করা হয় তারা এখন মানুষের মনে ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো স্টাফ ও কর্মকর্তা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা সেটা তদন্ত সাপেক্ষ। তবে প্রকাশিত তথ্যাদি যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের চরম অবহেলা, নির্বুদ্ধিতা, অজ্ঞতা, গাফিলতি, লাগামহীনতা পরিলক্ষিত হয় এবং চেইন অব কমান্ডে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মনিটরিং, সুপারভিশন ও নিয়ন্ত্রণের ভয়ানক অভাব দেখা যায়। এ বিষয়গুলো একনজরে দেখার জন্য লেখার এই পর্যায়ে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের তালিকার ওপর একটু নজর বুলাই। এক. বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে (তৃতীয় পক্ষ হ্যাকিং পন্থায়) ৩৫টি অ্যাডভাইস বা অনুমতিপত্র ইস্যু করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বরাবর। SWIFT পদ্ধতিতে এগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয় এবং পাঁচটি অনুমতিপত্রে উল্লিখিত ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের ২ কোটি শ্রীলঙ্কায় এবং বাদবাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ফিলিপাইনের গ্রহীতার অ্যাকাউন্টে চফলে যায়। তবে পাঁচটি অনুমতিপত্র কার্যকর হওয়ার পর আরও ৩০টি অনুমতিপত্র পরপর আসায় যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ ব্যাংকের মনিটরিং কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়, তত্ক্ষণাৎ সেগুলো বন্ধ করে দেয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায়।

 

 

পেমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া ৩০টি অনুমতিপত্রের মোট অ্যামাউন্ট এবং সেটি কোন কোন দেশে যেত তা প্রকাশিত তথ্যে পরিষ্কার নয়। দুই. অনুমতিপত্রগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে থেকে যায় ৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময়। নিউইয়র্কে তখন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা। হয়তো দুর্বৃত্তদের পরিকল্পনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ ব্যাংকের সুপারভাইজারদের চোখে কোনো রকম অস্বাভাবিকতা ধরা পড়লেও বাংলাদেশে পরপর দুই দিন (শুক্র, শনি) সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় কোনো রেসপন্স পাবে না। এই ফাঁকে তাদের মিশন সম্পন্ন হয়ে যাবে। তিন. ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মনিটরিং, সুপারভিশন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সব ছুটির দিনে রাউন্ড দ্য ক্লোক পদ্ধতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা আবশ্যক। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকে এ ব্যবস্থা নেই বলে জানা গেছে। চার. ১৩ মার্চ র‍্যাবের সূত্রে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট আইডি ও সুইফট কোড লোকাল সার্ভার থেকে হ্যাকড হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফায়ারওয়াল (নিরাপত্তা অ্যালার্ম ব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় ছিল। ১৭ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের অতি সংবেদনশীল ব্যাক অফিস (সুইফট সার্ভার কক্ষ)। নড়বড়ে ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ ওই কক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পাঁচ. পেমেন্ট বন্ধ করার নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফিলিপাইনে যায় ৯ ফেব্রুয়ারি। হয়তো সময়ের ব্যবধানে ওই নির্দেশনা পৌঁছানোর আগেই ৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের ব্যাংক (আরসিবিসি) প্রায় সব ডলার গ্রহীতার নামে পেমেন্ট করে দেয়। জানা গেছে এ টাকা ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে (জুয়ার আসর) যায় এবং সেখান থেকে হংকংয়ে পাচার হয়ে গেছে। ছয়. বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাক অফিস অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যারা হ্যান্ডেল করেন, তারা ৫ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) অফিসে আসেন বলে পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। সেদিন তাদের কাছে কম্পিউটার হ্যাক হওয়ার আলামত বা অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। তাহলে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে ৫ ফেব্রুয়ারিতে কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের টপ টু বটম সবারই কানে অ্যালার্ম বেল বেজে উঠল না। সময়ের পার্থক্যের কারণে বাংলাদেশের ৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দিবাগত সারা রাত নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক খোলা ছিল। তাহলে আমাদের শুক্রবার সারাদিন এবং তারপর সারা রাত সময়ের মধ্যে নিউইয়র্কের রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ করলে সব জানা যেত। তাহলে ৫ ফেব্রুয়ারিতে পেমেন্ট বন্ধের নির্দেশ গেলে ফিলিপাইনের ব্যাংক থেকে ডলার গ্রহীতাকে পেমেন্ট দেওয়া হতো না। ফিলিপাইনের অফিস ওই সময়ে বন্ধ হলেও জোরাল প্রচেষ্টায় সেখানকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন অসম্ভব হতো না। প্রয়োজনবোধে ঢাকার ফিলিপাইনের দূতাবাসের সাহায্য নেওয়া যেত। ম্যানিলায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকেও কাজে লাগানো যেত। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পেমেন্ট বন্ধের বার্তা ফিলিপাইনে গেল ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখে। তত সময়ে ডলার চলে গেছে জুয়াড়িদের হাতে। প্রযুক্তি যত উন্নত, আধুনিক বা শক্তিশালী হোক না কেন, যারা এগুলো হ্যান্ডেল করে, পাসওয়ার্ড, আইডি যাদের কাছে, তারাই সবকিছুর নিরাপত্তা বিধানের রক্ষাকবচ। তাছাড়া বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির অগ্রায়ণ ও পরিবর্তনের গতি এত বেশি যে, তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত পদ্ধতির প্রতিনিয়ত একই মাত্রায় ক্রমউন্নতি বাস্তবতার নিরিখে সম্ভব নয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত পদ্ধতি সব সময়ে নিরাপত্তার হুমকির মুখে থাকে। সুতরাং আধুনিক যুগে যন্ত্র ছাড়া চলবে না, তবে যন্ত্রের পিছনের মানুষটাই আসল। মানুষের ওপরই নির্ভর করতে হবে। রাষ্ট্রের অতি সংবেদনশীল জায়গায় যারা কাজ করেন তারা অবশ্যই বিশ্বাসী বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু নিরাপত্তার মৌলিক কথা হলো— ব্যক্তি যত বিশ্বাসীই হোক না কেন, কাউকেই সব সময় শতভাগ নিশ্চিত হিসেবে ধরা যাবে না। তাই সবারই ওপর নিবিড় ও নিয়মিত নিরাপত্তা নজরদারি আবশ্যক এবং তাদের নিরাপত্তার ছাড়পত্রের হালনাগাদ অনবরত একটা পদ্ধতির মধ্যে রাখা দরকার। কারণ, বিশ্বের বড় বড় নিরাপত্তা দুর্ঘটনার মূল্যায়নে দেখা যায় সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষটিই এক সময়ে ঘরের শত্রু বিভীষণ কখন হয়ে যায় তা টের পাওয়া যায় না। তাছাড়া সংবেদনশীল জায়গায় কর্তব্যে থাকা মানুষ নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ট্র্যাপে পড়ে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে যায়। নিজের তখন আর কিছুই করার থাকে না। আরেকটি বিষয় হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। ফিলিপাইনের সরকার অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে কঠোর অবস্থান থেকে বের করার চেষ্টা করছে এ টাকাগুলো কোথায় থেকে কোথায় গেল। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিনেট কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে এবং নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ফেডারেল তদন্ত সংস্থাকে। অনেককে বলতে শুনছি বাংলাদেশ থেকে ফিলিপাইন নাকি অনেক বেশি সিরিয়াস। এ টাকার বড় অংশ ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে (জুয়ার আসর) চলে গেছে। সেখান থেকে আবার তা হংকং এবং অন্যান্য জায়গায় চলে গেছে। ফিলিপাইনের দক্ষিণ-পূর্ব মিনদানাও প্রদেশে মুসলিম বিদ্রোহী মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের (MILF) স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহ চলছে বহুদিন যাবৎ। ইতিপূর্বে ক্যাসিনোর টাকা ওই বিদ্রোহীদের হাতে চলে যাওয়ার ঘটনা আছে। আবার অন্য সমস্যা হলো—ক্যাসিনোর টাকা ফিলিপাইনের মানি লন্ডারিং (টাকা পাচার) আইনের আওতার বাইরে। সুতরাং মরো সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে টাকা চলে যাওয়ার আশঙ্কা ও ভয় দুটোই ফিলিপাইন সরকারের মধ্যে কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। এখন আমাদের নিরাপত্তার শঙ্কার কথা একটু বলি। ফিলিপাইনের মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের ব্যাক অফিস খোলা হয় পাকিস্তানের করাচিতে ১৯৮৪ সালে জেনারেল জিয়াউল হকের সময়ে (সূত্র- পাকিস্তান বিটুইন মস্ক অ্যান্ড মিলিটারি, হোসেন হাক্কানী, পৃ. ১৯১)। সে অফিস এখনো পাকিস্তানে সক্রিয় আছে বলে জানা যায়। রোহিঙ্গাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুসলিম বিদ্রোহীদের অফিসও ওই সময়ে পাকিস্তানে খোলা হয়। এদের সবাইকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। বাংলাদেশে জামায়াতপ্রসূত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি, হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে আইএসআইয়ের পৃষ্ঠপোষকতা ও সংযোগের প্রমাণ তো সাম্প্রতিক সময়ে হাতেনাতে পাওয়া গেছে। গত এক বছরে ঢাকার পাকিস্তানের দূতাবাসের দুজন কর্মকর্তা জঙ্গি তত্পরতায় জড়িত থাকার ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়ার পর পাকিস্তানে ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছে। সুতরাং কোথাকার জল কোথায় দিয়ে গড়িয়ে কোথায় গিয়ে পড়ে সেটা ভাবনায় থাকা প্রয়োজন। তাই টাকা পাচারের সঙ্গে যদি ফিলিপাইনের মরো মুসলিম বিদ্রোহীদের কোনো সংযোগ থেকে থাকে তাহলে সেটি আমাদের নিরাপত্তার জন্যও শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গত বছর জঙ্গিদের দ্বারা আশুলিয়ার ব্যাংক ডাকাতি প্রমাণ করে বাংলাদেশের জঙ্গিরা এখন কিছুটা আর্থিক সংকটে আছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গোলাম আযমের রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল থেকে বলা হয়েছিল— রাষ্ট্রের সব জায়গায় জামায়াতী আদর্শ মনোভাবাপন্ন ও জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতিশীল লোকজন রয়েছে। তাদের শনাক্ত করা দরকার এবং ব্যবস্থা নেওয়া উচিত যাতে ঘরের ভিতরের বিভীষণ সম্পর্কে সতর্ক ও নিরাপদ থাকা যায়। নিরাপত্তার বিশ্লেষণে কেউ এবং কোনো কিছুই সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। তাই নিরাপত্তার বিষয়ে সংকুচিত নয়, প্রসারিত দৃষ্টিতে সবকিছুকে দেখতে হবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রশ্নে সামান্য অসতর্কতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।

লেখক : কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর