সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুন্দরবনকে রক্ষা করুন

শ্যালা নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল বন্ধ হোক

১৫ মাস আগে সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী জাহাজ ডুবির ঘটনায় তিন লাখ লিটার তেল ছড়িয়ে পড়ে। ভয়াবহ দূষণের শিকার হয় বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবন। জাতিসংঘ বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে যে অনন্য সুন্দর বাঁদাবনকে তার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠার আশঙ্কা সৃষ্টি করে এ

দূষণ প্রক্রিয়া। সুন্দরবন এবং সংলগ্ন নদীনালার জীববৈচিত্র্যের জন্যও তা বিসংবাদ সৃষ্টি করে। ১৫ মাস পরে সে দূষণ অনেকখানি সামাল দেওয়া গেলেও ক্ষয়ক্ষতির রেশ যে এখনো রয়ে গেছে তা স্পষ্ট। শ্যালা নদীর দুর্ঘটনার পর সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট নদ-নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি ওঠে। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কোর পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নৌ চলাচলের বিকল্প চ্যানেল চালু করে শ্যালা নদীতে যান্ত্রিক নৌ চলাচল বন্ধ করা হবে। কিন্তু ১৫ মাস কেটে যাওয়ার পরও বিকল্প নৌপথ চালু হয়নি। শ্যালা নদীতে ইতিমধ্যে সার বোঝাই জাহাজ ডুবি ঘটেছে। সর্বশেষ শনিবার ডুবেছে সাড়ে ১২শ মেট্রিক টন কয়লাবাহী একটি কার্গো জাহাজ। ডলফিনের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত সুন্দরবনের এ অংশে নতুনভাবে জাহাজ ডুবিতে নদী দূষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১৫ মাস আগের ভয়াবহ দূষণে গাছপালার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ডলফিন, কুমির, শামুকসহ বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণীর জন্য তা বিপদ ডেকে আনে। জোয়ারভাটার কারণে দূষণ প্রাকৃতিকভাবে অনেকটা কাটিয়ে ওঠা গেলেও তার জের এখনো অব্যাহত। শ্যালা নদীতে শনিবারের কয়লাবাহী জাহাজ ডুবি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই অনিন্দ্য সুন্দর বাদাবনের সুরক্ষায় আমাদের কর্তাব্যক্তিদের কোনো দায় আছে কিনা সে প্রশ্নই নতুনভাবে সামনে এনেছে। সুন্দরবন সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা এখনো পর্যন্ত খাতা-কলমেই রয়ে গেছে। বাস্তবায়নের যেন কেউ নেই। দেশের ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত এই বনভূমিকে টিকিয়ে রাখতে দায়িত্বহীন মনোভাবের অবসান ঘটাতে হবে। বন্ধ করতে হবে সুন্দরবনে যান্ত্রিক নৌ চলাচল। সুন্দরবনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন সব কার্যক্রম থেকেও দূরে থাকতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর