সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইতিহাস

পাগল সুলতান!

ইতিহাসবিদ এলফিনস্টোনের মতে, সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলক নানা ক্ষেত্রে পাগলামির শিকার হয়েছিলেন। তার উক্তি ভি এ স্মিথ, হ্যাবল, এস আর শর্মা প্রমুখ লেখক কর্তৃক সমর্থিত হয়। কিন্তু ড. ঈশ্বরী প্রসাদ মত প্রকাশ করেন যে, মুহম্মদ বিন তুঘলকের বিরুদ্ধে রক্তলোলুপতা ও পাগলামির কোনো প্রমাণ উল্লেখ করেননি। সম্ভবত এলফিনস্টোন ও অন্যান্য ইউরোপীয় ঐতিহাসিক ইবনে বতুতা ও বারানীর এ উক্তি দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন যে, সুলতানের প্রাসাদের সম্মুখে সর্বদা কিছুসংখ্যক মৃতদেহ পড়ে থাকত। সুলতান ক্ষুদ্র অপরাধে মৃতুদণ্ড দান করতেন। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, তিনি উন্মাদ ছিলেন। এটি সত্য যে, সুলতান মধ্যযুগের সব স্বৈরাচারী নরপতিদের ন্যায় অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিতেন এবং শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি ধনী-দরিদ্র ও উচ্চ-নীচের মধ্যে কোনো পার্থক্য করতেন না। এর কারণ ছিল তার অনুপাত-জ্ঞানের অভাব এবং ইউরোপ ও এশিয়াতে সে সময় অনুরূপ শাস্তিদান প্রথার প্রচলন। তার ধর্মবিরোধী নীতিতে বিরক্ত হয়ে গোঁড়া লেখকরা সুলতানের বিরুদ্ধে রক্তলোলুপতার অভিযোগ এনেছিলেন। মি. ব্রাউন সঙ্গতভাবেই মন্তব্য করেন, ‘তিনি (সুলতান) যে উন্মাদ ছিলেন তৎসম্পর্কে সমসাময়িক ব্যক্তিরা কোনো আভাস দেননি। তিনি যে স্বাপ্নিক ছিলেন তার বহুমুখী বাস্তব ও উদ্যমপূর্ণ চরিত্র তা বিশ্বাস করতে আমাদের প্রলুব্ধ করে না। তাকে স্বেচ্ছাচারী বলে অভিহিত করা সত্য হতে পারে, কিন্তু মধ্যযুগে এটি ব্যতীত অন্যবিধ শাসনব্যবস্থা অভাবনীয় ছিল।’

 

সর্বশেষ খবর