মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ

উন্নয়নের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে

বাঙালি কবির কবিতার পঙিক্ত ‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। যৌবন শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনেরও সুবর্ণ সময় হিসেবে বিবেচিত।

সেই সুবর্ণ সময়ের অধিকারী এখন বাংলাদেশ। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৫টি দেশ সম্পর্কে প্রকাশিতব্য মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে তরুণদের দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ মানুষের বয়স ২৪ বছর কিংবা তার নিচে। দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ বা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। জনসংখ্যাতাত্ত্বিক এই অবস্থান বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। ইউএনডিপি বলছে, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আরও বেশি কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। আর বিনিয়োগ বাড়াতে হবে উত্পাদনশীল খাতে। ইউএনডিপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। অর্থাত্ মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই কর্মক্ষম। আগামী ১৫ বছরে অর্থাত্ ২০৩০ সাল নাগাদ কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১২ কোটি ৯৮ লাখে, যা হবে মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ। দেশে বয়স্ক বা ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ ৭ শতাংশ। ২০৩০ ও ২০৫০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ১২ ও ২২ শতাংশে। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদদের মতে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে তরুণ জনগোষ্ঠীকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে। বাংলাদেশের সামনেও সোনালি ভবিষ্যত্ হাতছানি দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল হবে কিনা তা নির্ভর করছে সৃষ্ট সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যাবে তার ওপর। বাংলাদেশের জন্য এ মুহূর্তে সমস্যা হলো জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ বেকার। যুব জনগোষ্ঠীর একটি অংশ অভিভাবকদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের যথাযথ পদক্ষেপ যেমন দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে তেমন এ ক্ষেত্রের ব্যর্থতা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের সোনালি ভবিষ্যতের স্বার্থেই কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে গতি আনার উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর