মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্রীষ্মের দাবদাহ

স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে

গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে সারা দেশ। আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী রবিবার রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল এ সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। দেশের অনেক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে খরা বিরাজ করলেও কোনো কোনো এলাকায় অতিবর্ষণের কারণে বন্যাও দেখা দিয়েছে। সিলেটসহ হাওর এলাকায় চলতি বছরের এই সময়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের ৬ গুণ বেশি। অনাবৃষ্টির কারণে দেশের বহু এলাকায় মাঠের ফসল যখন পুড়ছে, সেচের জন্য যখন কৃষককে বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে, তখন সিলেটে প্লাবনে নষ্ট হচ্ছে হাওর এলাকার ফসল। দেশের একদিকে এই সময়ের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়ে ৭৫ শতাংশ কম হলেও অন্য এলাকায় বিরাজ করছে বিপরীত চিত্র। আবহাওয়াবিদদের মতে ‘এল নিনো’র প্রভাবে প্রকৃতিতে বেসামাল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে দুই থেকে সাত বছর পরপর প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝবরাবর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে উত্তাপ বেড়ে যায় ও বিশ্বের বায়ুপ্রবাহের গতিবিধি বেসামাল হয়ে পড়ে। এল নিনোর প্রভাবে আফ্রিকা মহাদেশে ইতিমধ্যে তীব্র খরা দেখা দিয়েছে, ভারতেও চলছে খরা। বাংলাদেশেও দাবদাহ চলছে এক পক্ষকালের বেশি সময় ধরে। আবহাওয়াবিদদের মতে বছরের এই সময়ে বঙ্গোপসাগর থেকে দখিনা বাতাস দেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এবার হঠাত্ এই সময়ে পশ্চিমা বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে ওই দখিনা বায়ুকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, মৌলভীবাজারসহ কয়েকটি জেলার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফলে ওই এলাকায় টানা বৃষ্টি হলেও সারা দেশে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড উত্তাপ। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে হঠাত্ করে। দাবদাহের তীব্রতা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকলে তা মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হয়েও উঠতে পারে। গ্রীষ্মে দাবদাহের তীব্রতা প্রমাণ করেছে প্রকৃতি বেসামাল হয়ে উঠলে মানুষের জন্য তা কতটা কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে। এ বাস্তবতা মনে রেখে যেসব কারণে আবহাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা এড়ানোর জন্য যত্নবান হতে হবে। দাবদাহে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় থাকতে হবে সতর্ক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর