মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

আল্লাহর ক্ষমা যেভাবে পাওয়া যায়

আল্লামা মাহমুদুল হাসান

মাওলানা আশরাফ আলী থানভি (রহ.) লিখেছেন, এক মূর্খ ব্যক্তি ইবাদত করে উচ্চ মাকামের অধিকারী হয় এবং সদাসর্বদা আল্লাহর দরবারে অশ্রুসিক্ত হয়ে নিজের জন্য অনবরত মাগফিরাত কামনা করতে থাকে। এ অবস্থায় গায়েবি আওয়াজের মাধ্যমে তাকে জানানো হয় যে, ‘কান্নাকাটি করে মোনাজাত করে কোনো লাভ নেই, কারণ ক্ষমা করা হবে না।’ এ আওয়াজ শুনে সে আরও অধীরচিত্তে অশ্রুসিক্ত হয়ে মোনাজাতে লিপ্ত হয়। লোকেরা বলল, আপনাকে যখন ক্ষমা না করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এর পরও এত কষ্ট স্বীকার ও কান্নাকাটি করে মোনাজাত করে কী লাভ হবে? সে উত্তর দিল, ‘আমার কাজ আমি করছি, আমার তো অন্য কোথাও যাওয়ার ঠাঁই নেই, তাই আমাকে বিরক্ত করো না। আমার কাজ আমাকে করতেই হবে।’ সেই মুহূর্তে গায়েবি আওয়াজ এলো, ‘যদিও তার মাঝে ক্ষমাযোগ্য কোনো আমল নেই কিন্তু যেহেতু সে মনে করে আমি ছাড়া তার কোনো আশ্রয় নেই, সেহেতু অনুগ্রহ করে তাকে আমি ক্ষমা করে দিলাম।’

বুখারিতে আছে, এক ব্যক্তি মৃত্যুর সময় সন্তানদের ওসিয়ত করে যায় যে, ‘মৃত্যুর পর আমাকে মাটিতে দাফন না করে আগুনে জ্বালিয়ে ছাই করে প্রবল বাতাসে উড়িয়ে দেবে, কেননা আমার মতো পাপী ও অপরাধী এ দুনিয়ায় আর কেউ নেই। আল্লাহর সামনে আমাকে দাঁড়াতে হলে কোনো উত্তর আমি পারব না।’ ওসিয়ত অনুযায়ী মৃত্যুর পর তাই করা হলো। কিন্তু আল্লাহর হুকুমে সব ছাই যখন একত্রিত করে মানুষের আকৃতিতে তাকে আল্লাহর সামনে দাঁড় করানো হলো, তখন সে অত্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেন তুমি তোমার সন্তানদের তোমার দেহ জ্বালিয়ে ছাই করে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলে? আমি কি ছাই থেকে তোমার দেহ উপস্থিত করতে সক্ষম নই?’ লোকটি উত্তর দিল, ‘হে প্রভু! আপনি জানেন আমি বড়ই অপরাধী, গুনাগার। আমার এ অপরাধসহ কোন মুখে আমি আপনার সামনে হাজিরা দেব। আপনার আজাবের ভয়েই আমি এই ওসিয়ত করেছিলাম।’ তার জবাবে আল্লাহ বললেন, ‘তোমার অন্তরে অনুতাপ এবং আমার ভীতি রয়েছে; যার অন্তরে আমার ভয় থাকে তাকে ক্ষমা করার কথা আমি ওয়াদা করেছি। তাই আজ আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।’

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর