শনিবার, ১৪ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

তরুণদের হাতে ছেড়ে দিলেই রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ

তরুণদের হাতে ছেড়ে দিলেই রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে

প্রায় শতবর্ষী রাজনীতিক অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেছেন, কোনো পদ-পদবির জন্য তিনি রাজনীতিতে আসেননি। শেখ মুজিব আমাকে অনেক কিছু বানানোর চেষ্টা করেছিলেন, আমি হই নাই। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম। বিশ্বখ্যাত তত্ত্ব ‘ধর্ম কর্ম সমাজতন্ত্র’-এর প্রবক্তা বলেন, ধর্মকে বাদ দিয়ে সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন করতে হলে ধর্মকে পাশে নিয়েই করতে হবে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিমুল মাহমুদ ও রফিকুল ইসলাম রনি

 

এক মাস আগে গত ১৪ এপ্রিল ৯৫ বছরে পা রেখেছেন তিনি। কথা বলতে গেলে মুখে জড়িয়ে যায়। কানেও স্পষ্ট শুনতে পান না। বয়সের ভারে ন্যুব্জ শয্যাশায়ী বরেণ্য রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে বঙ্গবন্ধু তার মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন। প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। গত বছর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পদক দিতে চেয়েছিলেন তাকে। সেই স্বাধীনতা পদকও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। আজীবন সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা ‘কুঁড়ে ঘর’ মার্কার অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, তরুণদের হাতে ছেড়ে দিলেই রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে। রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকতা যত বাড়বে ততই তা জনগণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। রাজনীতির অর্থ দেশ সেবা, মানুষের সেবা। পদ বা পদবির জন্য কখনো রাজনীতি করি নাই। শেখ মুজিব আমাকে অনেক কিছু বানানোর চেষ্টা করেছিলেন, আমি হই নাই। আমি মহাত্মা গান্ধী, মওলানা ভাসানীর অনুসারী। তিনি বলেন, পদক দিলে বা নিলেই সম্মানিত হয়, এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আমি বিশ্বাসী নই। দেশপ্রেম ও মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম, কোনো পদক বা পদ-পদবি আমাকে উদ্বুদ্ধ করেনি। সত্যিকার অর্থে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তারা কেউই কোনো প্রাপ্তির আশায় করেননি।

দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, ধর্মকে বাদ দিয়ে সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন করতে হলে ধর্মকে পাশে নিয়েই করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি তার বিশ্বখ্যাত তত্ত্ব ‘ধর্ম কর্ম সমাজতন্ত্র’ উল্লেখ করে বলেন, সমাজতন্ত্রের সঙ্গে ধর্মীয় মূল্যবোধকে আমিই প্রথম সংযোজন করতে সক্ষম হই। এরপরই তৎকালীন সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট লিওনিদ ব্রেজনেভ বলেছিলেন, সমাজতন্ত্রের সংগ্রামে ধর্মের পতাকা আগে যাবে।

দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক কর্মী সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে ‘সামাজিক বিজ্ঞান পরিষদ’ নামে একটি রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেন। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, সেটি এখন ভালো চলছে না। সেখানে থাকা ফ্রি। খাওয়া যার যার। মুসলমানরা সেখানে যায় না। হিন্দুরা যায়। কেউ রাজনীতি শিখতে চায় না। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চলছে তবে আগের মতো আর নেই।

পুরনো স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, সাধারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা নেতাদের ফাঁকিবাজি সহজে ধরতে পারে। সাধারণ মানুষকে উপেক্ষা করলে তারা সেটা বুঝতে পারে। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, একবার খুলনায় গেছি জনসভা করতে। জনসভায় আমি বলেছি, কেউ থাকবে সাত তলায়, কেউ থাকবে গাছ তলায়, তা হবে না, তা হবে না। জনসভা শেষে নেতাদের গাড়িতে করে ফিরে আসছি। এমন সময় পেছন থেকে ছেলেরা স্লোগান দেয়, কেউ চড়বে গাড়িতে, কেউ যাবে হাইট্টা, তা হবে না, তা হবে না। শেষে গাড়ি থেকে নামলাম। ছেলেদের গাড়িতে তুলে কয়েকটা চক্কর দিলাম। তারপর ফিরে এলাম।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ছিলেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের ছয় সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের একজন। যে স্বপ্ন নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন সে স্বপ্নের কতটা বাস্তবায়ন হলো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পঁয়তাল্লিশ বছরে সামগ্রিকভাবে কী হয়েছে সেটা পরের বিষয়। তবে আমার শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে যদি দেখি তাহলে ব্যক্তিগত লেভেলে-গোষ্ঠীগত লেভেলে হয়নি তা নয়, কেউ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, কলাগাছ-বড়গাছ। যেখানে কয়েকজন কোটিপতি ছিলেন, সেখানে কয়েক হাজার কোটিপতি হয়েছেন। বৈষম্য বাড়ছে ৫৪০ গুণ। আগে ছিল ১৩ গুণ। বর্তমানে সমস্যা অনেক। বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। দিন দিন নতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ধনী-দরিদ্র সমস্যা বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। বৈষম্য কমাতে হবে। আশার আলো হচ্ছে জনতা। দেশের জনগণ অত্যন্ত সচেতন। দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে হবে। সমস্যা সমাধানে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। সঠিক নেতৃত্ব, সঠিক রাজনীতি করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার ভালো কিছু কাজ করছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন করেছে। শিক্ষা ও কৃষি ক্ষেত্রে ভালো কাজ শুরু করেছে। বাম রাজনীতিবিদরা নিজেদের আদর্শ ভুলে গিয়ে অন্য দলে বিলীন হয়ে যাবেন না। বর্তমান রাজনীতির আদর্শহীন বাণিজ্যনির্ভরতা সম্পর্কে নিজের হতাশা ব্যক্ত করেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। তিনি বলেন, বক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বর্তমান সময়ের একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি হলেও নিজের মূল্যায়ন সম্পর্কে মনে হয় যে, এখনকার রাজনীতিতে আমি বেমানান। কারণ, এখন রাজনীতির মানেই হচ্ছে জনগণের কাঁধে বন্দুক রেখে কিংবা দেশ-জাতীয় কল্যাণের ছদ্মবেশ ধারণ করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করা, ক্ষমতার মদ্যপান করে মাতাল হওয়া কিংবা ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা। রাজনৈতিক বক্তব্য হচ্ছে পরস্পরের প্রতি কুৎসা বা বিষোদগার করা। প্রতিপক্ষকে ধ্বংস বা জ্বালাও-পোড়াও করা— এটা হয়ে গেছে রাজনীতির নীতি। আমি এসবে ধাতস্থ হইনি বা হতেও চাই না। সে কারণেই হয়তো রাজনৈতিক সমালোচনার সম্মুখীন হই। তিনি বলেন, এখন পত্রিকার শিরোনাম হতে হলে আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখতে হবে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতাদের চোর-ডাকাত-বদমাশ বলতে হবে। ভালো কথা বললে পত্রিকায় জায়গা পাওয়া যাবে না। বিপরীতে ইতিবাচক রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শ নিয়ে অগ্রসর হতে চাই বলে আমি নাকি পিছিয়ে পড়েছি। ক্ষমতায় যেতে পারিনি। তাতে অবশ্য আমার কোনো শোক-তাপ নেই। আমি জানি রাজনীতিকে আবার যদি পবিত্র স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে নীতি-আদর্শ একদিন না একদিন বাস্তবায়িত হবেই। এতে মানুষ যদি আমাকে ভুল বোঝে তাতেও সমস্যা নেই। আমি মানুষের কাছে যাব। ‘মানুষের জন্য কথা’ আমি মানুষের কাছে গিয়েই বলব।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, এই মানুষকে আমি কতবার আমার জন্য কাঁদতে দেখেছি। কতবার দেখেছি আমার বুক ভরিয়ে দিয়েছে ভালোবাসায়। মানুষই আমার আত্মীয়। মানুষ আমাকে ভুল বুঝলে বুঝুক। মানুষের জন্য আমার ভালোবাসা। যত বিলম্বই হোক আমি ফিরতে চাই মানুষের কাছে ওই ভাঙা কুঁড়েঘরে।

তিনি বলেন, শোষণযুক্ত সমাজ শোষণমুক্ত হবেই হবে। সমাজ পরিবর্তনশীল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পথে বিভিন্ন নামে এগিয়ে যাচ্ছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলেও সমাজতন্ত্রের আবেদন শেষ হয়ে যায়নি। নতুন আঙ্গিকে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। পৃথিবী বদলাচ্ছে। বাংলাদেশও বদলাবে। জনগণের ওয়াল স্ট্রিট কানসাট, শনিরআখড়া, ফুলবাড়িয়া তার উদাহরণ।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, আমাদের দায়িত্ব মানুষের চলার মসৃণ পথ তৈরি করা। রাজনৈতিক দূরদর্শিতার সঙ্গে নেতা নির্বাচন করা, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। মনে রাখতে হবে এ দেশের পোড় খাওয়া মানুষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে কখনো ভুল করে না। মুখরোচক স্লোগান নয়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয়। বক্তৃতা কমাতে হবে। এত মেঘ কাটিয়ে সূর্য ওঠা অসম্ভব মনে হতে পারে। কিন্তু তা যে হতেই হবে। আমরা চাই সৎ রাজনীতিবিদ। সৎ রাজনীতিবিদরাই পারেন সৎ রাজনীতি উপহার দিতে। এ ছাড়া দেশের ও জনগণের মুক্তির কোনো পথ নেই। এই পথের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি যুবক-তরুণরাই। তারুণ্যই পারে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধই তার প্রমাণ।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজনীতি একটি আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে। রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকতা যত বেশি প্রাধান্য পাবে, রাজনীতি তত বেশি জনগণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। তিনি বলেন, এখনকার রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই। তাই রাজনীতিকদের মানুষ ভালোভাবে নেয় না। আগে রাজনীতি ছিল একটি ত্যাগের নাম। এখন হয়েছে ব্যবসা। তিনি বলেন, আমি রাজনীতিবিদদের বলি, আমরা তো পারলাম না, এবার তরুণদের হাতে রাজনীতি ছেড়ে দাও। তাহলেই রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে। রাজনীতিবিদদের চরিত্র সম্পর্কে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, তারা কেউ দেশের জন্য ভাবে না। দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। সবাই নিজের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করে। তারা বিরোধী দলে গেলে সিরাজউদ্দৌলা আর সরকারে গেলে মীরজাফর। আইয়ুব সরকারের আমলে দীর্ঘ আট বছর আত্মগোপনে থাকাটা তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় সময় বলে মনে করেন অধ্যাপক মোজাফফর। ভারতের মহাত্মা গান্ধীকে আজও আদর্শ মনে করেন তিনি। নীতি-আদর্শ বজায় রেখে চলেছেন এখনো। এতটুকু পরিবর্তন হয়নি তার রাজনৈতিক মতাদর্শে।

 

এক নজরে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কৃতী ছাত্র দীর্ঘদিন বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে (১৯৫২-১৯৫৪) শিক্ষকতা করেন। মোজাফফর আহমদের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ১৯৩৭ সালে। ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৫৪ সালে চাকরি ছেড়ে পুরোপুরিভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে দেবিদ্বার আসনে মুসলিম লীগের শিক্ষামন্ত্রী মফিজুর রহমানকে পরাজিত করেন। ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল আওয়ামী লীগের বিরোধিতা সত্ত্বেও পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে ন্যাপ নেতা অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসক আইয়ুব সরকার তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। তিনি ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি অবিভক্ত পাকিস্তান ন্যাপের যুগ্ম সম্পাদকও ছিলেন। ১৯৬৯-এ আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং কারাবরণ করেন। ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামে মূল নেতৃত্বের একজন ছিলেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। ওই সময় তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ, সিপিবি ও ছাত্র ইউনিয়নের নিজস্ব ১৯ হাজার কর্মীকে মুক্তিযোদ্ধা করে তোলার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়। মোজাফফর আহমদের সম্পাদনায় নতুন বাংলা নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকাও প্রকাশিত হয় মুজিবনগর থেকে। ১৯৭৯ সালেও তিনি এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে ন্যাপ, সিপিবি এবং প্রগতিশীল শক্তির প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা করেন। ১৯৮২ সালে স্বৈরাচারী এরশাদবিরোধী আন্দোলনের শুরুতে কারারুদ্ধ হন। তার লেখা বইয়ের মধ্যে আছে ‘সমাজতন্ত্র কী এবং কেন’, ‘প্রকৃত গণতন্ত্র তথা সমাজতন্ত্র সম্পর্কে জানার কথা’, ‘মার্ক্সবাদী সমাজতন্ত্র ও কিছু কথা’। ব্যক্তিগত জীবনে একমাত্র কন্যাসন্তানের জনক। তার সহধর্মিণী আমিনা আহমদ ন্যাপের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য। কুঁড়েঘর খ্যাত মোজাফফর আহমদ বর্তমানে বারিধারায় তার মেয়ের বাসায় থাকেন।

সর্বশেষ খবর