জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় আগামী অর্থবছরের জন্য এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল এডিপির আকার ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ব্যয় ১২ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা যুক্ত করে এডিপির ওই বিশাল আকার দাঁড় করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম এডিপির আকার লাখ কোটি টাকার অঙ্ক অতিক্রম করছে। প্রস্তাবিত এডিপি বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন থেকে জোগান দেওয়া হবে ৭০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে ১২ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে পরিবহন খাত। এই খাত এডিপির প্রায় ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ অর্থ বা ২৮ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে। এরপর শিক্ষা ও ধর্ম খাত ১৪ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে, তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ১২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা পেতে যাচ্ছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাত। খাতওয়ারি বরাদ্দের বাইরেও স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন সহায়তার নামে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়নের আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পে এই বিপুল অর্থ ব্যয় করা হবে। এর মধ্যে থোক বা বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা রয়েছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে বড়সড়ো আকারের যে উচ্চাভিলাষী এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে তার উদ্দেশ্য দেশের উন্নয়ন দ্রুততর করা। সন্দেহ নেই এ ব্যাপারে বর্তমান সরকার শুরু থেকেই আন্তরিকতা প্রদর্শন করছে। তবে বড় আকারের এডিপি প্রণয়নই বড় কথা নয়, তার বাস্তবায়নই যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা এ যাবৎকালের বাস্তবতায় প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আশা করব, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ তথা সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি যথাসময়ে এবং সঠিকভবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। এডিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাইয়ের যে প্রবণতা রয়েছে তা রোধেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রস্তাবিত এডিপি জনগণের কল্যাণে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে তা নিশ্চিত করতে এ ক্ষেত্রে সরকারকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।