বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানোর উদ্যোগ

গৃহীত প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন কাম্য

রাজধানী ঢাকা আর বুড়িগঙ্গা নদী এক সূত্রেই গাঁথা। ৪০০ বছর আগে সুবে বাংলার রাজধানী হিসেবে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী ঢাকাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। বলা যায়, ঢাকা যে আজ বাংলাদেশের রাজধানী এ গৌরবের জন্য এ জনপদের অধিবাসীদের বুড়িগঙ্গার কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা কতটা কৃতঘ্নতার পরিচয় দিয়েছি দখল দূষণে অস্তিত্ব হারানোর হুমকিতে উপনীত বুড়িগঙ্গা তারই প্রমাণ। শুধু বুড়িগঙ্গা নয় একই ধরনের অবস্থার শিকার রাজধানীর অন্য নদীগুলোও। শিল্পবর্জ্য ও গৃহস্থালি বর্জ্যের কারণে বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার নদ-নদীগুলো বিশ্বের অন্যতম দূষিত নদীতে পরিণত হতে চলেছে। এ নদীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বহু আগেই। এমনকি পরিশোধন করে বুড়িগঙ্গার পানি ব্যবহার করাও জটিল হয়ে পড়ছে। নদীর পানি এতটাই বেহাল হয়ে পড়েছে যে তার দুর্গন্ধে পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষও বিব্রত হয়। নৌকা বা নৌযানে চলাচলের সময় যাত্রীরা অস্বস্তিতে পড়ে। বুড়িগঙ্গায় অক্সিজেনের অভাবে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর টিকে থাকাও দুঃসহ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থার উত্তরণে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ১ হাজার ১২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ নদী পুনঃখনন করা হবে, বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকা মহানগরীর চারপাশে বহমান নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ বজায় রাখা হবে এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল ৯৪৪ কোটি টাকা। একনেক সভায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সভায় জানানো হয়, পলি পড়ার কারণে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীর ধারণক্ষমতা কমে গেছে। এর ফলে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানির প্রবাহ হ্রাস পায় এবং নাব্যতা কমে যায়। উৎসমুখে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যায়। প্রকল্পটির আওতায় নদীগুলো খনন করে সারা বছর নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। বুড়িগঙ্গার অবৈধ জবরদখলকৃত জমিও উদ্ধার করা হবে। বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার নদ-নদীগুলো নগরবাসীর অস্তিত্বের অনুষঙ্গ হিসেবে বিরাজ করছে। নদ-নদী রক্ষায় শুধু প্রকল্প গ্রহণ নয়, তার যথাযথ বাস্তবায়নেও নজর দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর