বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

আল্লাহপাকের ভয় অন্তরে সৃষ্টি করতে হবে

মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহ্মূদুল হাসান

আল্লাহপাকের ভয় অন্তরে দুভাবে আসে। ক. বাহ্যিক কিছু আমলের দ্বারা। তা হলো— বেশি বেশি আজাবের আয়াতসমূহ পড়া এবং এগুলো নিয়ে চিন্তা করা। আমল না করলে কঠিন ভয়ানক শাস্তিতে পতিত হতে হবে। এসব বিষয়ে চিন্তা করা। আজাবের বিভিন্ন ঘটনা পড়া। এ ছাড়া আল্লাহপাকের অসীম কুদরত ও ক্ষমতার প্রতি খেয়াল করা। পুলিশ দেখে সাধারণ মানুষ ভয় করে না, কিন্তু যে আসামি, সে অবশ্যই পুলিশ দেখলে পলায়ন করবে। কারণ সে জানে, পুলিশ তাকে ধরতে পারলে শায়েস্তা করবে। আল্লাহপাকের ক্ষমতা অসীম, তিনি মহাপরাক্রমশালী ও শক্তিধর; তার শক্তির সামনে কারও শক্তি নেই। সেই শক্তি তিনি প্রয়োগ করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধরদের ওপর। ফেরাউন, নমরুদ, শাদ্দাদ, কারুণ, কউমে লূত ও বনী ইসরাইল এসব সম্প্রদায়কে তিনি চিরতরে ক্ষমতা প্রয়োগে কোনো বাধা নেই, আমি গোনাহ করলে আমার ওপরও এসব শাস্তি প্রয়োগ করতে পারবেন। সুতরাং গোনাহ করা যাবে না, ভয় করতে হবে।

ভয় সৃষ্টির মাঝে মূলকাজ হলো অন্তরে ভয় আসার দোয়া করতে থাকা। এ ভয়ের মাঝে সীমা রক্ষা করা আবশ্যক। প্রত্যেক জিনিসের সীমা আছে, ওই সীমাকে অতিক্রম করা অনুচিত ও ক্ষতির কারণ। সুতরাং ভয়ের মাঝেও সীমাতিক্রম করা যাবে না। আল্লাহপাকের কাছে এ পরিমাণ ভয়ের দোয়া করবে, যার দ্বারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। হজরত থানভী (রহ.) বলেন, ভয়ের সঙ্গে মুহব্বত আবশ্যক। মুহব্বত ও ভয় উভয়টা আবশ্যক। যে কোনো একটা দ্বারা উদ্দেশ্য অর্জন হবে না। ভয়ের কারণে কাছে যেতে মনে চাবে না, তাই ভয়ের সঙ্গে মুহব্বত কাম্য।

আল্লাহ পাক ইচ্ছা করলে সবকিছু করতে পারেন। মুহূর্তের মধ্যে যুগশ্রেষ্ঠ ওলি বানাতে পারেন। এমন অনেক ঘটনা আছে যে, আল্লাহপাক মুহূর্তের মধ্যে জীবনের পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তার দৃষ্টান্ত হজরত আবদুল আজিজ দাববাগ। তিনি কোনো লেখাপড়া করেননি, আরবি অক্ষরগুলো কারও কাছে শিখে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেখা গেল আল্লাহর ওলীদের সংশ্রবে থেকে যুগশ্রেষ্ঠ বুজুর্গ হয়েছেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আক্ষরিক কোনো জ্ঞান ছিল না। কিন্তু তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ নবী। এগুলো সব আল্লাহপাকের ইচ্ছা। তিনি চাইলে আমাকেও পরিবর্তন করে যুগের ওলি বানাতে পারেন। তিনি হলেন, অন্তর পরিবর্তনকারী। তাই বেশি বেশি এই দোয়া পড়া উচিত। হে অন্তর পরিবর্তনকারী, আমাদের অন্তর আপনার আনুগত্যে স্থির করে দিন।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।

সর্বশেষ খবর