মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

শরণার্থী সমস্যা

সংঘাত বন্ধে উদ্যোগ নিন

বিশ্বের ছয় কোটি মানুষই এখন বাস্তুচ্যুত। সোজা কথায় পৃথিবীর প্রায় এক শতাংশ মানুষ এ মহা দুরবস্থার শিকার। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ২ কোটি ১৩ লাখ মানুষ শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। শরণার্থীদের ৫৪ শতাংশই এসেছে তিনটি দেশ সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও সিরিয়া থেকে। গৃহযুদ্ধকবলিত এ তিনটি দেশই ব্যর্থ রাষ্ট্রের প্রতিকৃতিতে পরিণত হয়েছে। ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে তুরস্কে ২৫ লাখ, পাকিস্তানে ১৬ লাখ, লেবাননে ১১ লাখ, ইরানে প্রায় ১০ লাখ, ইথিওপিয়ায় পৌনে ১০ লাখ ও জর্ডানে প্রায় ৭ লাখ শরণার্থী রয়েছে। এ ছাড়া কেনিয়ায় প্রায় ৬ লাখ, উগান্ডায় ৪ লাখ ২৮ হাজার, চাদে ৪ লাখ ২১ হাজার, সুদানে ৩ লাখ ২২ হাজার, ইরাকে ২ লাখ ৮৮ হাজার ও সিরিয়ায় দেড় লাখ শরণার্থী রয়েছেন। এ বছর এখন পর্যন্ত ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৩ জন ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে আশ্রয় নিয়েছেন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১০ লাখের বেশি। শরণার্থী সমস্যা দুনিয়ার বহু দেশে ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশও এ সমস্যার প্রত্যক্ষ শিকার। বর্তমানে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে এবং শরণার্থীর মতো অবস্থায় আছেন ৩ থেকে ৫ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত আছেন ৩২ হাজার ৮৯৪ জন রোহিঙ্গা। বাকি ২ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। সরকারিভাবে করা রোহিঙ্গা শুমারিতেও এই সংখ্যা ৩ লাখ বলে তথ্য মিলেছে। এদের বেশির ভাগই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দুনিয়ার দেশে দেশে গৃহযুদ্ধ ও জাতিগত সংঘাত শরণার্থী সমস্যাকে তীব্রতর করে তুলছে। যতদিন সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে যুদ্ধ সংঘাত ও ঘৃণার আবহ থাকবে ততদিন শরণার্থী সমস্যা অপ্রতিরোধ্যভাবে নিজের উপস্থিতি জানান দেবে। শরণার্থী সমস্যার সমাধানে বিশ্বসমাজকে দায়িত্বশীল হতে হবে। গোত্রগত জাতিগত সংঘাতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘকে কড়া মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সংঘাত ও হানাহানিতে বাইরের মদদ বন্ধের উদ্যোগ থাকা দরকার। প্রতিটি মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় সব রাষ্ট্র এবং সমাজকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। শরণার্থী সমস্যার ইতি ঘটানোর সেটিই হবে প্রকৃষ্ট উপায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর