শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

চিনির বাজারে অস্থিরতা

মুনাফাখোরদের সামাল দিন

চিনিকল মালিকদের অশুভ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে রোজাদার মানুষ। রোজায় চিনির ব্যবহার বাড়ে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ। ইফতারিতে শরবত অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত। জিলাপি ও নানা ধরনের মিষ্টান্ন দ্রব্যের ব্যবহারও এ সময় বাড়ে। ফলে প্রতিবছর রোজাকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হয় মুনাফাখোররা। দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা ১৫ লাখ টন। এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত চিনি আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ টন। এর পাশাপাশি সরকারি চিনিকলে উৎপাদন হয়েছে এক লাখ টন চিনি। চাহিদার চেয়ে তিন লাখ টন বেশি চিনি মজুদ থাকা সত্ত্বেও তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চিনির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি আদায় করছে। রোজার মাসে প্রতিদিনই কয়েক কোটি টাকা জমা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের পকেটে। এ বছর চিনির দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধির পেছনে সরকারের ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত অনেকাংশে দায়ী। সরকারি চিনিকলগুলোকে মদদ জোগাতে গত বছরের আগস্টে চিনি আমদানির ওপর ২০ শতাংশ সংরক্ষণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়। এরপর ডিসেম্বরে আরোপ করা হয় ১৫ শতাংশ ভ্যাট। যার পরিণতিতে চিনির দাম বৃদ্ধি অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। রোজাকে সামনে রেখে বেসরকারি চিনি পরিশোধন কারখানাগুলো সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে চিনির দাম ২০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। সরকারি চিনিকলগুলো তাদের মজুদ ১ লাখ টন চিনি বাজারে ছেড়ে নিজেরা ভারমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি বেসরকারি চিনিকল মালিকদের কালোবাজারি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকা ভক্ষণকারী পরজীবীরা সে পথে এগোনোর কোনো দায় বোধ করেননি। এ বছর চিনির বাজারে কৃত্রিম সংকটের জন্য একটি বৃহৎ চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানের কারসাজি কাজ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আমরা আশা করব সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সক্ষমতা দেখাবে। চিনির দাম সহনশীল করতে সংরক্ষণশীল কর প্রত্যাহারের বিষয়টিও ভেবে দেখা উচিত। দেশবাসীর ওপর মামদো ভূতের মতো চেপে বসা সরকারি চিনি কলগুলো টিকিয়ে রাখা উচিত কিনা সে বিষয়েও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর