শিরোনাম
সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ধনীরা জাকাত না দিলে আখেরাতে কঠিন শাস্তি

মাওলানা আবদুর রশিদ

জাকাত এমন একটি ঐশী বিধান যা ধনীদের জন্য বাধ্যতামূলক। জাকাত থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোনো মুসলমান যদি আর্থিক দিক থেকে জাকাত প্রদানের উপযুক্ত হয় এবং সে যদি জাকাত প্রদানে অনীহা দেখায় তবে আল্লাহর তরফ থেকে তার জন্য কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। পবিত্র কোরআন এবং রসুল (সা.)-এর হাদিসে এ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। জাকাত যারা না দেয় তাদের জন্য কি শাস্তি অপেক্ষা করছে একটি ঘটনা সে ইঙ্গিতই দেয়।

হজরত মুহাম্মদ বিন ইউসুফ আল-ফারইয়াবী (রহ.) বলেন : ‘আমি একবার আমার কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে হজরত আবু সিনান (রহ.)-এর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। আমরা তার কাছে গিয়ে বসার পর তিনি আমাদের বললেন : আমার এক প্রতিবেশীর ভাই মারা গেছে। চলুন, তার সঙ্গে দেখা করে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে আসি। তার প্রতিবেশীর কাছে পৌঁছে দেখতে পেলাম, তিনি কান্নাকাটি করছেন। আমাদের বললেন তার ভাই কবরে, ভীষণ আজাব ভোগ করছেন।

আমরা বললাম : আল্লাহ কি আপনাকে এ সংবাদ জানিয়েছেন? তিনি বললেন : না, বরং তার দাফন শেষে সবাই চলে যাওয়ার পর আমি কিছু সময় তার কবরের কাছে বসেছিলাম। হঠাৎ কবর থেকে এ আর্তনাদ শুনতে পেলাম, ‘আহ! আমাকে শাস্তি ভোগের জন্য এখানে একা বসানো হয়েছে। অথচ আমি নামাজ-রোজা করতাম।’ তার এ কথায় আমার কান্না এলো। আমি তার অবস্থা জানার ইচ্ছায় কবর খুঁড়ে দেখতে পেলাম : দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে এবং তার গলায় আগুনের শিকল ঝুলানো। ভাইয়ের এ শোচনীয় পরিণতিতে আমি অস্থির হয়ে তার গলা থেকে আগুনের শিকল ফেলে দিতে হাত বাড়ালাম, আমারও হাতের আঙ্গুল পুড়ে গেল। এই বলে তিনি আমাদের তার দগ্ধীভূত কালো হাত দেখিয়ে বললেন, আমি কি এখন স্থির থাকতে পারি? আমরা জিজ্ঞাসা করলাম : আপনার ভাই জীবিত থাকা অবস্থায় শরিয়তের বিধানের ব্যাপারে কি করত? তিনি জবাব দিলেন : সে জাকাত আদায় করত না। আমরা বললাম, এটাই আল্লাহর ঘোষণার যথার্থ বাস্তবায়ন। আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন : ‘আর যারা আল্লাহর দেওয়া সম্পদে কার্পণ্য করে, তারা যেন তাদের এ কার্পণ্যকে নিজেদের জন্য মঙ্গলজনক মনে না করে। বরং তা তাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।  যে সম্পদে তারা কার্পণ্য করত কেয়ামতের দিন তা তাদের গলায় লটকানো হবে।’ হয়তো আপনার ভাইকে হাশরের দিন পর্যন্ত আগাম শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর