মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

তরুণদের দিকে নজর দিন

নষ্ট হওয়ার প্রবণতা রোধ করুন

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্টুরেন্টের জঙ্গি হামলায় জড়িতদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই সচ্ছল পরিবারের সদস্য। তারা সবাই পড়াশোনা করেছে পশ্চিমা ধাঁচে গড়ে ওঠা ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। জঙ্গিদের একজন এক বছর আগেও ভারতীয় এক সিনেমা নায়িকার সঙ্গে এক পার্টিতে নেচেছে। শুধু নাচা নয় নিজেই সে ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছে। দেশের অভিজাত ইংরেজি মাধ্যম স্কুল স্কলাসটিকার ছাত্র ছিল জঙ্গি তরুণ রোহান ইমতিয়াজ ও মীর সামি মোবাশ্বের। নিব্রাস ইসলাম ছিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র। পড়েছে মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আরেক জঙ্গি রাইয়ান মিনহাজের স্কুলজীবন কেটেছে অভিজাত ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগাখান স্কুলে। এরপর তার পড়াশোনা প্লে পেন ও মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দালিব আহমেদও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিদেশে পড়াশোনার জন্য যাওয়ার আগে সে দেশে নামি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল সানিডেলের ছাত্র ছিল। দেশের ইংরেজি মাধ্যমের অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে মাদকাসক্তির বিস্তার লাভের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। স্কলাসটিকার ছাত্র ঐশী তার বাবা-মাকে খুন করেছিল তার মাদক গ্রহণের স্বাধীনতায় বাধা সৃষ্টির প্রতিশোধ নিতে। ইয়াবা নামের মাদক আসক্তদের কতটা বেপরোয়া করে তুলতে পারে এটি ছিল তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মীয় মূল্যবোধের ধারেকাছে না থাকলেও সচ্ছল পরিবারের উচ্ছন্নে যাওয়া সন্তানদের কেউ কেউ যে রোমান্টিকজমের মোহে জঙ্গিদের ফাঁদে পা দেন তা সহজেই অনুমেয়। গুলশান কাণ্ডে নিহত জঙ্গিদের সঙ্গে মাদকাসক্তের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। জঙ্গিদের হোতারা শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম ইসলামের অপব্যাখ্যা করে তরুণদের একটি ক্ষুদ্র অংশকে বিপথগামী করছে। জঙ্গিবাদে জড়িতদের দু-একজন মাদ্রাসা ছাত্র হলেও অন্যরা ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ। ইসলামের সঙ্গে জঙ্গিবাদের দূরতম সম্পর্ক না থাকলেও অশুভ শক্তি বিভ্রান্ত যুবকদের প্রভাবিত করতে পারছে কোরআন সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতার কারণে। জঙ্গিবাদ ঠেকাতে তাই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোরআনের শিক্ষাকে সামনে আনতে হবে। এ ব্যাপারে দেশের আলেম সমাজকে কাজে লাগানোর কথা ভাবতে হবে।

সন্তানদের নষ্ট হওয়ার প্রবণতা ঠেকাতে অভিভাবকদের সতর্কতাও কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর