বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা

দোষীরা যেন পার না পায়

জামালপুরের রেলস্টেশনে রেলওয়ে পুলিশের প্রহারে একজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতির অবনতি রোধে জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাসহ আট পুলিশকে প্রত্যাহার এবং জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে প্রহার করে পুলিশ। মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল বারীর পুত্র বাবু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ছাত্র। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারীর ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাজহারুল হক বাবু ঈদের ছুটি শেষে গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মেইল ট্রেনে বঙ্গবন্ধু সেতু-পূর্ব স্টেশনে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিনা টিকিটে ভ্রমণের অভিযোগে জামালপুর জিআরপি থানা পুলিশের সদস্যরা মাজহারুল হককে আটক করেন। খবর পেয়ে তার বাবা আবদুল বারী রেলস্টেশনে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এ নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য আবদুল বারীকে ঘুষি ও প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারলে তিনি প্লাটফর্মে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে প্রহার শুধু অমানবিকই নয়, মানবাধিকারের লঙ্ঘন। বিনা টিকিটে ভ্রমণ অবশ্যই অপরাধ। এ অপরাধে বাবুর আটক বৈধতারই দাবি রাখে। পুত্রের পক্ষে তার বাবার ওকালতি আইনের দৃষ্টিতে অবাঞ্ছিত হলেও তাকে প্রহার করা কিংবা পিটিয়ে মেরে ফেলার কোনো অধিকার আইন রেল পুলিশকে দেয়নি। আমরা আশা করব মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার যথাযথ তদন্ত হবে এবং এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি সততা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

সর্বশেষ খবর