সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদকে শিক্ষার্থীদের ‘না’

জনসচেতনতার এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের দৈত্যকে ‘না’ বলতে জেগে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। গত শনিবার সারা দেশের প্রায় ৪০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে সভা-সমাবেশ হয়েছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, মসজিদের ইমাম এবং সাহিত্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এসব সমাবেশে অংশ নেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসব সমাবেশে জঙ্গিবাদবিরোধী অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার শপথ নেন। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা এবং সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টির লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভা সমাবেশের আয়োজন সময়ের প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাত্পর্যের দাবিদার। জঙ্গিবাদীরা শিক্ষার্থীদের ফুসলিয়ে বিভ্রান্ত করছে। মেধাবী সরল সোজা একজন তরুণকে ভয়াল দৈত্যে পরিণত করছে। তাদের দিয়ে বোমা বানাচ্ছে। মানুষ খুনে উদ্বুদ্ধ করছে। জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জীবন উৎসর্গ করার প্ররোচনা দিয়ে বলা হচ্ছে এভাবে মরলেই বিনা বিচারে বেহেশতে যাওয়া যাবে। মিলবে অনন্ত শান্তি। মিলবে হুরপরী। ইসলামি বিশ্বাস অনুুযায়ী ধার্মিক ও সজ্জন যারা পরকালে তারা পুরস্কৃত হয় জান্নাতপ্রাপ্তির মাধ্যমে। কিন্তু জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ তো জান্নাত প্রাপ্তির পথ নয়। ইসলাম কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতাকে অনুমোদন করে না। ইসলামে আত্মহননও মহাপাপ। জঙ্গিবাদের উপাসকরা যাতে দেশের তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ অশুভ দৈত্যের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠান নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে শুধু অনুপ্রেরণা জোগাবে না, বিপথগামীদের সঠিক পথে আসতেও উদ্বুদ্ধ করবে। যারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়নের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সাহস জোগাবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার তাগিদ সৃষ্টি হবে। জঙ্গিবাদীরা দেশের তরুণদের একটি অতি ক্ষুদ্র অংশকে ইসলাম সম্পর্কে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম ইসলামের ভাবমূর্তি তারা কলঙ্কিত করেছে সন্ত্রাস সৃষ্টির মদদ জুগিয়ে। আমরা আশা করব প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশ করেই দায় সারা হবে না। ইসলামের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যে দূরতম সম্পর্কও নেই সে সত্যটি তুলে ধরতে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কোরআন ও হাদিসের বাণীগুলোও ব্যাপকভাবে প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। জঙ্গিবাদ ঠেকাতে হলে তার কুিসত চেহারা উন্মোচন যেমন করতে হবে তেমনি ইসলামের সঙ্গে তার পার্থক্য কোথায় সে সত্যটিও স্পষ্ট করা জরুরি।

সর্বশেষ খবর