শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান

মিয়ানমারের সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনা কাম্য

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, দেশটির নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে এ ব্যাপারে কাজ করার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দফতরের ট্রাস্টি শিপ কাউন্সিল চেম্বারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আয়োজিত এক আলোচনা চক্রে বক্তব্যদানকালে যে আহ্বান জানিয়েছেন তা বিশেষ তাত্পর্যের দাবিদার। এর আগে নিউইয়র্কে মিয়ানমারের অবিসংবাদিত নেত্রী, সে দেশের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকেও তিনি একই অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে বাংলাদেশে। নিজেদের সীমিত সম্পদ নিয়েও বাংলাদেশ এসব শরণার্থীর জন্য মানবিক দায়িত্ব পালন করছে। এ জন্য যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই দেশের আস্থার সম্পর্ক স্থাপনেও রোহিঙ্গা সমস্যা নানাক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা তাদের দেশে সসম্মানে ফিরে যাক এবং পুনর্বাসিত হোক। বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে এবং এর বাইরে যে পাঁচ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক অবস্থান করছে তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া সে দেশের নতুন গণতান্ত্রিক সরকারের দায়িত্ব বলেও বিবেচিত হওয়া উচিত। মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের স্বার্থেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তাদের হওয়া উচিত এবং বাংলাদেশ সুপ্রতিবেশী হিসেবে এ ব্যাপারে সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশ মিয়ানমারের পাশে থাকতে চায়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও দুই দেশের সহযোগিতার সুযোগ বিদ্যমান। এ কারণেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধানে আগ্রহী। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি পূর্বতন মিয়ানমার সরকার কথা দিয়েও শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে গড়িমসি করেছে, আগের সামরিক সরকারের ভুল পথ থেকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার সরে আসবে এমনটিই দেখতে চায় বাংলাদেশ।  প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নতুন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তা দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দ্বার খুলে দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। নিজেদের স্বার্থেই মিয়ানমার এ ব্যাপারে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনাকে প্রাধান্য দেবে এমনটিও কাঙ্ক্ষিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর