শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আবারও লঞ্চ দুর্ঘটনা

জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ হোক

আবারও লঞ্চডুবির ঘটনায় অসহায়ভাবে মারা গেল বেশ কয়েকজন যাত্রী। গত বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চডুবিতে এ পর্যন্ত ১৭টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১২ জন। দুর্ঘটনায় পতিত এমএল ঐশী নামের লঞ্চটির কোনো রুট পারমিট ছিল না। ছোট আকারের লঞ্চটি বুধবার সকাল ১১টার দিকে প্রায় ৩০ জন যাত্রী নিয়ে পাশের উপজেলা উজিরপুরের হাবিবপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাঝপথে বানারীপাড়ার রাজার খালের মোহনায় যাত্রী ওঠানামার পর ঘাট ছাড়ার সময় হঠাৎ নদী ভাঙনে বড় আকারের পাড় সামনের অংশে ভেঙে পড়লে লঞ্চটি কাত হয়ে ডুবে যায়। দুর্ঘটনার পর পাঁচ-ছয়জন যাত্রী সাঁতার কেটে কূলে উঠতে সমর্থ হয়। দুর্ঘটনা স্থল থেকে ১৭টি লাশ উদ্ধার হলেও নিখোঁজ রয়েছে ১২ জন যাত্রী। আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রবল স্রোতে তাদের লাশ দূরে সরে গেছে। বানারীপাড়ায় ঈদের পরপরই লঞ্চডুবির ঘটনা ধারেকাছের জনপদে শোকাবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটির রুট পারমিট ছিল না। সোজা কথায় অবৈধভাবে লঞ্চটি যাত্রী পরিবহন করছিল। বর্ষা মৌসুমে নদীতে যখন প্রবল স্রোত এবং ভাঙনের তাণ্ডব চলছে তখন এ ধরনের লঞ্চ চলাচল যে ঝুঁকিপূর্ণ তা সহজে অনুমেয়। লঞ্চডুবির পর দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে বরিশালের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মৃত লঞ্চ যাত্রীদের লাশ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বজনদের ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যসহ কর্তাব্যক্তিরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। প্রতিটি লঞ্চ দুর্ঘটনার পর এগুলো আনুষ্ঠানিকতার অংশ বলে বিবেচিত হয় এবং তা পালনে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও রুট পারমিটহীন লঞ্চ চলাচল যেমন বন্ধ হচ্ছে না, লঞ্চ দুর্ঘটনার লাগামও টেনে ধরা যাচ্ছে না।  তদন্ত কমিটি গঠনে ঘাটতি না থাকলেও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ এবং দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার প্রতিফলন না থাকায় বার বার নিয়ম ভঙ্গের ঘটনা ঘটছে। লঞ্চ দুর্ঘটনায় লাগাম পরাতে হলে এসব দিকে কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার বিষয়টিও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর