শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা

শুভ বুদ্ধি ও সুবিবেচনাই কাম্য

পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের সন্দেহভাজন জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সেনা ছাউনিতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর থেকে আসা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হামলার প্রতিশোধ নিতে যে এ হামলা চালানো হলো, তা স্পষ্ট। তবে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানি অংশে ভারতীয় বাহিনীর এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েন যে আরও জটিল করে তুলবে তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। ভারতের দাবি কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিতে তাদের হামলায় দুজন পাকিস্তানি সৈন্যসহ ৩৮ জন নিহত হয়েছে। ইসলামাবাদের দাবি হামলার সময় পাকিস্তানি বাহিনীর পাল্টা গুলিতে ৮ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। একজন ভারতীয় সৈন্যকে আটক করার দাবিও করেছে তারা। উরির বিপর্যয়ের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে সীমান্তজুড়ে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় বাহিনীর চার ঘণ্টার হামলায় তা আরও যে ঘনীভূত হলো সেটি সহজেই অনুমানযোগ্য। জঙ্গি ইস্যু নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কাও দানা বেঁধে উঠছে। সম্পর্কের টানাপড়েনে নভেম্বরে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিতব্য সার্ক শীর্ষ সম্মেলন ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন সামনে থাকায় তার আগে দুই দেশ সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার আশ্রয় নিয়ে সম্পর্কের অবনতি রোধে সচেষ্ট হবে—এমনটিই আশা করা হয়েছিল। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বাতিলের ফলে সংঘাত নিরসনের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে তা দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে বিবেচিত হবে। যে ঘটনা নিয়ে টানাপড়েনের সূত্রপাত উরির ভারতীয় ঘাঁটিতে কাশ্মীরী জঙ্গিদের হামলায় পাকিস্তান সরকার সরাসরি জড়িত এটি ভারতের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়নি। কিন্তু হামলাকারীরা যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রশ্রয় পেয়েছে এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। পাকিস্তান সরকার তাদের নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে জঙ্গিদের প্রশ্রয় না দিলে উত্তেজনার কোনো সুযোগ যে সৃষ্টি হতো না, তা স্পষ্ট। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সংঘাত এড়াতে হামলার জবাবে হামলার বদলে যেসব কারণে সম্পর্কের অবনতি ঘটছে তার গ্রন্থি মোচনের উদ্যোগ নিতে হবে। জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা যে দেশেরই হোক তাদের নিরস্ত করতে আন্তরিক হতে হবে। এ ব্যাপারে সব পক্ষের শুভবুদ্ধির বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর