ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি রুকনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তন্মধ্যে অন্যতম রুকন হচ্ছে হজ। যা সামর্থ্যবান মুমিন ব্যক্তির ওপর আদায় করা ফরজ। মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘মানুষের মধ্যে যার বায়তুল্লাহ যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সে গৃহে হজ করা তার জন্য ফরজ।’
রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ইসলামের ভিত্তি হলো পাঁচটি স্তম্ভের ওপর। এক. আল্লাহতায়ালা ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও রসুল এ কথার সাক্ষী দেওয়া। দুই. নামাজ কায়েম করা। তিন. জাকাত আদায় করা। চার. বায়তুল্লাহর হজ করা। পাঁচ. রমজানের রোজা রাখা। (বুখারি মুসলিম)
এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যারা সঠিকভাবে আদায় করবে আল্লাহতায়ালা তাদের জন্য রেখেছেন মহান সম্মান ও পুরস্কার। হাদিস শরিফে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন ‘জান্নাতই হচ্ছে মকবুল হজের একমাত্র পুরস্কার’। (বুখারি)অন্যত্র নবী করিম (সা.) আরও ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি স্ত্রী সম্ভোগ ও অন্যায় কার্যাদি থেকে বিরত থেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ আদায় করবে, সে মাতৃগর্ভ থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে। (বুখারি)
মহানবী (সা.) হজ পালনকারীদের থেকে দোয়া নেওয়ার ব্যাপারে উম্মতকে উৎসাহিত করে ঘোষণা করেছেন, ‘যখন তুমি কোনো হাজী সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে তখন তুমি তাকে সালাম করবে, মুসাফাহা করবে এবং তার বাড়িতে প্রবেশের আগে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুরোধ করবে। কেননা তিনি তো ক্ষমাপ্রাপ্ত।
রসুলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেন, হাজী ও ওমরাহ আদায়কারী হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা দোয়া করলে আল্লাহপাক দোয়া কবুল করেন এবং গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তা ক্ষমা করে দেন।
তাই ফজিলতপ্রাপ্ত সৌভাগ্যবান আল্লাহ ঘরের মেহমান হাজী সাহেবদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো— হজ-পরবর্তীকালে নিজেকে নেক আমলের সঙ্গে জড়িয়ে রাখা, আখেরাতমুখী ফিকির অন্তরে পয়দা করা, গোনাহের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করা, মোট কথা নিজেকে একজন খালেস মুমিন মুত্তাকী হিসেবে গঠন করা যার ফলে সামাজিকভাবে হজের গুরুত্ব প্রত্যেক মানুষের মাঝে প্রভাব সৃষ্টি করবে।
আল্লাহতায়ালা আমাদের হজে মাকবুল নসিব করুন। আমিন।